ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে প্রধান শিক্ষককে রাজকীয় বিদায়
প্রকাশ: সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪:৩৭ পিএম  (ভিজিট : ৪০০)
শিক্ষক হলেন যারা শিক্ষাদানের মহান ব্রত পালন করেন। শিক্ষকদের জাতি গঠনের কারিগর বলা হয়। কেননা একজন আদর্শ শিক্ষকই পারেন তার অনুসারীদের জ্ঞান ও ন্যায় দীক্ষা দিতে। শিক্ষার্থীর মানবতাবোধকে জাগ্রত করে একজন শিক্ষক কেবল পাঠদানকে সার্থকই করে তোলেন না, পাশাপাশি দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেন। স্বীয় জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করে তাদেরকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলেন। আর এই শিক্ষক যদি প্রকৃত শিক্ষাদানের মধ্য শেষ দিন পর্যন্ত সবাইকে জয় করতে পারেন। তাহলেই কেবল, শিক্ষকতা শেষে তাকে ঘোড়ার গাড়ি বা পালকিতে চড়ে অবসরে যাওয়ার সম্মান টুকু পান। এমন একজন নাটোরের প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ দিঘাপতিয়া পি এন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলিম উদ্দিন। তার বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দিয়েছেন রাজকীয় সংবর্ধনা।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নাটোর সদর উপজেলায় দিঘাপতিয়া পি এন উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে শহরের দক্ষিণ পটুয়াপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে পৌঁছান এ শিক্ষক। এসময় স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঘোড়ার গাড়ির পিছনে মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার বহন নিয়ে শিক্ষককে বাড়িতে পৌঁছে দেন।  

বিদায় ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাটোর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাজনীন সুলতানা, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রমজান আলীসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারীসহ শিক্ষার্থীবৃন্দ।

তথ্যমতে জানা যায়, ২০১০ সালে নাটোর জেলার প্রাচীনতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিঘাপতিয়া পি এন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে ১৯৭৭ সালে বড়াইগ্রাম নগর উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা শুরু করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে হয়বতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। তারপর ২০১০ সালে দিঘাপতিয়া পি এন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘ প্রায় ১৪ পর সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করেন। অবসর জনিত কারণে গত ১৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষকতা জীবনের সমাপ্ত ঘটে।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাপসী রানী ভট্টাচার্য্য বলেন, তিনি অনেক ভালো ও উদার মনের মানুষ। শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ প্রিয় ছিলেন। কখনো রাগ বা ক্ষোভ দেখিনি। পিতার মতো শিক্ষার্থীদের পড়িয়েছেন। আমার কর্ম জীবনে এমন শিক্ষক পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমরা স্যারের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করছি।

সাবেক এ প্রধান শিক্ষক মো. আলিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ৩৭ বছর শিক্ষকতা শেষে অবসর নিয়েছি। মহান এ পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে আজ সার্থক। আমার শিক্ষকতায় অনেক শিক্ষার্থীদের পেয়েছি। তাদের ভালোবাসায় পেয়েছি, তাদের মনে স্থান পেয়েছি বলেই শেষ বিদায়ে তারা আমাকে অশ্রুসিক্ত জলে বিদায় দিয়েছেন। আমি সার্থক এমন শিক্ষার্থীদের পেয়ে। আমার শিক্ষক ও শিক্ষিকারা অনেক ভালো মনের মানুষ। তারা আমার এ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনে সর্বত্র দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। সেজন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  শিক্ষককে রাজকীয় বিদায়   নাটোর জেলা   রাজশাহী বিভাগ  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close