ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বিআরটিসির বাস-ট্রাকের ভাড়ার অর্থ হরিলুট
চালক, কন্ডাক্টর ও ম্যানেজারের পকেটে পৌনে ৭ কোটি টাকা
প্রকাশ: সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬:৪১ এএম আপডেট: ২৩.০৯.২০২৪ ৭:২১ এএম  (ভিজিট : ৩৪৫)
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বিভিন্ন রুটের বাস ভাড়ার ৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন চালক, কন্ডাক্টর ও ডিপো ম্যানেজার। এর মধ্যে বিআরটিসির চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকার মতিঝিল, কল্যাণপুর, মিরপুর ও জোয়ারসাহারা, গাজীপুর, বরিশাল, খুলনা ও রংপুর বাস ডিপোর পরিবহন সার্ভিস বাবদ পাওয়া ৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রাম ট্রাক ডিপোর ট্রিপ বাবদ আদায় করা ১ কোটি ৮৭ লাখ ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ করা হয়েছে। সম্প্রতি বিআরটিসির ওপর কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ অনিয়মের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিন বছরে বিভিন্ন ডিপোর ম্যানেজার ও বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে ট্রাক ভাড়া বাবদ পাওয়া ২ কোটি ২ লাখ টাকা এবং বিভিন্ন চালক, কন্ডাক্টর, সার্ভিস অপারেটর ও বাস লিজ নেওয়া ব্যক্তির মাধ্যমে ট্রিপ প্রতি হিসেবে পাওয়া রাজস্ব বাবদ আদায় করা মোট ৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ক্যাশিয়ার অথবা ম্যানেজারের কাছে জমা দেওয়ার বিধান থাকলেও তা জমা করা হয়নি। ফলে তা সংস্থার ব্যাংক হিসাবেও জমা হয়নি। এ টাকা বিভিন্ন বাস ডিপোর ম্যানেজার, লিজ গ্রহীতা, চালক, কন্ডাক্টর ও সার্ভিস অপারেটররা ক্যাশবই অনুযায়ী ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

অথচ জেনারেল ফিন্যান্সিয়াল রুলের বিধি ৮ অনুযায়ী সরকারের রাজস্ব পাওনা সঠিকভাবে এবং দ্রুত নির্ধারণ সংগ্রহ ও ব্যাংকে জমা দেওয়া রাজস্ব কিংবা প্রশাসনিক বিভাগের দায়িত্ব। জেনারেল ফিন্যান্সিয়াল রুলসের বিধি ২৮ মোতাবেক সব পাওনা নিয়মিত এবং দ্রুত নির্ধারণ, আদায় এবং যথারীতি সরকারি হিসাবে জমা নিশ্চিত করা বিভাগীয় কর্মকর্তার কর্তব্য। সংশ্লিষ্টরা এ বিধি লঙ্ঘন করে আদায় করা অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এর মধ্যে মিরপুর বাস ডিপোর ট্রিপ প্রতি রাজস্ব আদায়ের পর সার্ভিস অপারেটর প্রসেনজিৎ কুমার রক্ষিত জয় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা হিসাবভুক্ত করেননি। এ সময় এই ডিপোতে ব্যবস্থাপক ছিলেন মো. মনিরুজ্জামান, মো. জাহাঙ্গীর আলম ও মোস্তাফিজুর রহমান। মতিঝিল বাস ডিপোর চালক মো. হানিফ সরকার ৮৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা, মো. এনামুল হক সুমন ১৩ লাখ ১৪ হাজার টাকা, মো. কামরুজ্জামান কাজল ৫ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা দেননি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ ছাড়া রংপুর বাস ডিপোর কন্ডাক্টর মো. হোসেন সরকার ৬ লাখ ৫১ হাজার টাকা, মো. ফারুক হোসেন ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা, চালক মো. মোফাক্ষের উল আলম ৫৪ লাখ ৪৪ হাজার টাকা, মো. মাসুদ মিয়া ২২ লাখ টাকা, তরিকুল ইসলাম ৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা, মো. এমদাদুল হক ৫ লাখ ২ হাজার টাকা জমা দেননি। খুলনা বাস ডিপোর চালক ইলিয়াস হাওলাদার ৫ লাখ ৪১ হাজার টাকা, জিয়াত হক ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা, মো. কবির ৮ লাখ ১৮ হাজার টাকা, রবিউল ইসলাম ৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা ও কন্ডাক্টর নুর ইসলাম ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা দেননি।

অভিযোগের বিষয়ে বিআরটিসির পক্ষ থেকে লিখিত জবাবে বলা হয়, আপত্তিতে উল্লিখিত চালক ও কন্ডাক্টরদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করে প্রমাণসহ পরিবহন অডিটকে অবহিত করা হবে। তবে টাকা আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করা হলেও টাকা আদায়ের বিষয়ে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে বিআরটিসির ঢাকার মতিঝিল ও কল্যাণপুর এবং চট্টগ্রাম কার্যালয়ে দোকান ও স্থাপনা ভাড়া দেওয়া হলেও তা আদায় না করায় ৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে বছরের পর বছর ভাড়া না দিয়েই তারা ব্যবসা করছেন। 
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩৯টি নিলামযোগ্য অকেজো বাস নিলামে বিক্রি না করে দীর্ঘদিন ধরে ডিপোতে ফেলে রাখা হয়েছে। ডিপোসমূহ ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের নিলামে বিক্রয়যোগ্য বাসগুলোর বাইরের দিকটা ভালো থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখার কারণে বাসের ভেতরে ময়লা-আবর্জনা জমা হয়েছে।

সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close