ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ফজরের নামাজে যেসব সওয়াব মেলে
প্রকাশ: সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:১৩ এএম  (ভিজিট : ২৬৬)
প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানদের প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ আদায় করতে হয়। শরিয়ত বর্ণিত ওজরবিহীন ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কেউ নামাজ ছেড়ে দিলে সে কবিরা গুনাহকারী বলে গণ্য হবে। দৈনন্দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের প্রথম ফজর নামাজ। নানা কারণে ফজরের নামাজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার ফজিলতও অপরিসীম। পবিত্র কুরআনে ‘ফজর’ নামে একটি সুরাও অবতীর্ণ হয়েছে। এমনকি মহান আল্লাহ শপথ করেছেন ফজরের। ইরশাদ হয়েছে, ‘শপথ ফজরের’ (সুরা ফজর : ১)। পবিত্র সত্তা মহান আল্লাহর শপথ থেকে ফজরের মর্যাদার বিষয়টি অনুধাবন করা যায়। রাসুল (সা.)-এর ভাষায়, ফজরের নামাজ হলো মুমিন ও মুনাফিকের মধ্যে পার্থক্যকারী। কারণ মুনাফিকের জন্য ফজরের নামাজ আদায় করা কষ্টকর (বুখারি : ৬৫৭)। ফজরের নামাজের ফজিলত সম্পর্কে অগণিত হাদিস বর্ণিত হয়েছে।
 
আল্লাহর আশ্রয় লাভ : মানুষ জীবনের নিরাপত্তার জন্য কত পেরেশান থাকে। অথচ আল্লাহ নিজেই মানুষকে তার আশ্রয়ে স্থান দেন এবং তার জিম্মাদারি গ্রহণ করেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করে, সে ব্যক্তি আল্লাহর জিম্মায় চলে যায়। অর্থাৎ স্বয়ং আল্লাহ ওই ব্যক্তির দায়িত্ব নেন।’ (মুসলিম : ৬৫৭)

আল্লাহর দিদারের প্রতিশ্রুতি : একজন মানুষের সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো আল্লাহর দিদার ও দর্শন লাভ। যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতের সবচেয়ে বড় নেয়ামত দান করবেন। অর্থাৎ সে আল্লাহর দিদার লাভ করবে এবং জান্নাতি ওই ব্যক্তি আল্লাহকে পূর্ণিমারাতের আকাশের চাঁদের মতোই স্পষ্ট দেখবে। (বুখারি : ৫৫৩)

জাহান্নাম থেকে মুক্তি : জাহান্নাম অতি কষ্টদায়ক জায়গা। নিয়মিত ফজর নামাজ আদায়ে জাহান্নাম থেকে মুক্তি মিলবে এবং জান্নাত হবে তার ঠিকানা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিয়মিত ফজরের নামাজ আদায় করবে, সে কখনোই জাহান্নামে প্রবেশ করবে না’ (মুসলিম : ৬৩৪)। অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ফজরের নামাজ আদায় করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (বুখারি : ৫৭৪)

ফেরেশতাদের সাক্ষ্য দান : বিচারের দিনে প্রতিটি মানুষের প্রয়োজন হবে সাক্ষী ও প্রমাণের। ফজরের নামাজ আদায় করলে ফেরেশতারা সেই মানুষের পক্ষে সাক্ষ্য দান করবে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করবে, আল্লাহর ফেরেশতারা আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তিকে ভালো মানুষ হিসেবে সাক্ষ্য দেবে।’ (বুখারি : ৫৫৫)

সারারাত নফল আদায়ের সওয়াব : রাতের আমল আল্লাহর কাছে অনেক প্রিয়। কেউ যদি রাতের আরামের ঘুম বিসর্জন দিয়ে ঘুম থেকে উঠে ফজরের নামাজ পড়ে, এর জন্য আল্লাহ খুশি হয়ে তাকে সারারাত নফল নামাজ পড়ার সওয়াব দেবেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করে, আল্লাহ তার আমলে সারারাত দাঁড়িয়ে নফল নামাজ আদায়ের সওয়াব দিয়ে দেন।’ (মুসলিম : ৬৫৬)

কেয়ামতের দিন বিশেষ নূর : হাশরের মাঠে মানুষ অন্যরকম এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে। সবাই অস্থির ও পেরেশান থাকবে। বিশেষ করে পুলসিরাত পার হওয়ার সময় অন্ধকার দূর করার জন্য আলোর দরকার হবে। সেদিন যার যার আমল হবে নুর ও আলো। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ভোরে হেঁটে হেঁটে ফজরের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদে প্রবেশ করবে, আল্লাহ কেয়ামতের দিন তাকে পরিপূর্ণ আলো দান করবেন।’ (আবু দাউদ : ৪৯৪)

ফজরের সুন্নতের ফজিলত :প্রত্যেক ফরজ নামাজের আগে-পরে যেসব সুন্নত নামাজ রয়েছে এর সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ সুন্নত হলো ফজরের দুই রাকাত সুন্নত। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম’ (মুসলিম : ৭২৫)। তা ছাড়া ফজরের সুন্নতের ব্যাপারে ইসলামের বিশেষ নির্দেশনাও আছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা এই দুই রাকাত নামাজ কখনো ত্যাগ করো না, এমনকি শত্রুবাহিনী তোমাদের তাড়া করলেও’ (আবু দাউদ : ১২৫৮)। তবে কখনো যদি ফজরের জামাত দাঁড়িয়ে যায় আর দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে, তা হলে সুন্নত মসজিদের বাইরে পড়ে নেওয়া উত্তম। তবে কেউ যদি মসজিদের ভেতরে নামাজের কাতার থেকে দূরে এক কোণে বা খুঁটির আড়ালে পড়ে সেটাও জায়েজ। কিন্তু জামাতের কাতারে বা তার কাছে পড়া মাকরুহে তাহরিমি (কিফায়াতুল মুফতি : ৪/৫৫১)। আল্লাহ তায়ালা আমাদের ফজরের নামাজ গুরুত্বসহ আদায় করার তওফিক দান করুন।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close