আমাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কোনো না কোনো সময়ে ব্যথা থাকেই। পেটে ব্যথা, মাথা ব্যথা, দাঁতে ব্যথা হলেই ব্যথানাশক ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা কমায় এমন খাবারগুলো ভেষজ ও ওষধি গুণ সম্পন্ন। আসুন জেনে নিই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন খাবারের নাম।
হলুদ : হলুদের মধ্যে কারকিউমা নামের একটি উপাদান রয়েছে। এ উপাদান ব্যথা উপশম করতে সহায়তা করতে পারে। বিশেষত হাঁটুর অস্টিওআর্থারাইটিসের চিকিৎসায় এটি অত্যন্ত কার্যকর। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রতেও ব্যথানাশক হিসেবে হলুদের প্রচলন রয়েছে। প্রদাহ কমানোর জন্যেও অত্যন্ত কার্যকর হলুদ। রূপের দ্যুতি বাড়ানোর পাশাপাশি শরীর ফিট ও ব্যথামুক্ত রাখতে নিয়মিত গরম ভাতে আধা চামচ হলুদ খাওয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়া পোকামাকড়ের কামড়ে ত্বকে চুলকানি, জ্বালাভাব কমাতে হলুদ আর অ্যালোভেরা জেল মিলিয়ে লাগালে আরাম পাবেন।
রসুন : কানে ব্যথা বা দাঁতে ব্যথায় কাজে দেয় রসুন। কাঁচা রসুন খাওয়া সবচেয়ে ভালো। তবে এভাবে খেতে না পারলে রান্নায় রসুনের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। রসুনে রয়েছে অ্যালিসিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রক্ত চাপ কমায়,কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, হজমে সহায়তাসহ বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ এবং অসুস্থতার বিরুদ্ধে এটি লড়াই করে যায়। নিয়মিত রসুন খেলে সাধারণ সর্দি ও অন্যান্য সংক্রমিত রোগের তীব্রতা কমতে পারে।
আদা : শরীরচর্চা এবং দৌড়ানোর ফলে মাংসপেশির যে ব্যথা হয়, ৫ দিন এক টানা ২ গ্রাম করে আদা খেলে সেই ব্যথা হ্রাস পায়। কারণ আদার বিভিন্ন উপাদান রোগমুক্তি ত্বরান্বিত করতে পারে এবং ব্যায়াম সম্পর্কিত প্রদাহ কমাতে পারে। আর্থারাইটিস, পেটের ব্যথা, বুকের ব্যথা আর পিরিয়ডের ব্যথায় খুব ভালো কাজ করে আদা। মাইগ্রেনের ব্যথায়ও আদা চা পান করুন। এছাড়া কাশি, গলা ব্যথা সারাতেও কাজে দেয় আদা।
মরিচ : মরিচের মধ্যে প্রাকৃতিক ব্যথা উপশমের পদ্ধতি হিসেবে উপস্থিত ক্যাপসাইসিন। এই পদার্থটি ত্বকের ওপর প্রয়োগ করা হলে একটি হালকা জ্বলন বা ঝাঁঝাল সংবেদন সৃষ্টি হতে পারে। একটি মরিচ খাওয়ার পর শরীরে ক্যাপসাইসিন ব্যথা কমাতে কার্যকরী হয়ে পড়ে। এ কারণে ব্যথা উপশমকারী ওষুধেও ক্যাপসাইসিন উপাদান দেয়া হয়।
পুদিনা পাতা : ব্যথা কমাতে কার্যকরী পাতা বলা যেতে পারে পুদিনাকে। এ পাতার মেনথল উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকরী। মাসলের কিংবা মাথায় ব্যথায় কয়েকটি পুদিনার পাতা ভালো করে ধুয়ে চিবিয়ে খান। হজমশক্তি বাড়বে, ধীরে ধীরে ব্যথার বোধটা কমে যাবে। একই সাথে হাড় ও জয়েন্টের ব্যথা কমাতে দারুণ কাজ করে পুদিনা পাতা।
টক দই : প্রতিদিন দুপুরের খাবারের পর ছোট এক বাটি টক দই খাওয়ার অভ্যাস করুন। টক দইয়ে রয়েছে মাইক্রো-ফ্লোরা নামে বিশেষ একটি উপাদান। এটি শরীরের প্রদাহ এবং বদহজমের কারণে সৃষ্ট গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
এই খাবার ছাড়াও কমলা, গ্রিন টি, আনারস, টমেটো, অলিভ ওয়েল, রোজমেরী তেল, পাকা পেঁপে, তিল, বাদাম, ডার্ক চেরি, কফি, আপেল সবুজ শাক- সবজি শরীরের ব্যথা কমাতে দারুণ কাজ করে।
সময়ের আলো/জেডআই