ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আশুলিয়ায় ১৬টি বাদে খুলেছে সব কারখানা
প্রকাশ: রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:৪৬ এএম  (ভিজিট : ১২৮)
সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে টানা শ্রমিক অসন্তোষের পর কারখানাগুলোয় কর্মচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে। তবে এখনও ১৬টি পোশাক কারখানা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিতে বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলে অন্য কারখানাগুলোয় স্বাভাবিকভাবেই কাজ চলছে। সেখানে শ্রমিকদের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও সেনাবাহিনী টহল অব্যাহত আছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, আশুলিয়ার ডিইপিজেড, পল্লী বিদ্যুৎ, বাইপাইল, চক্রবর্তী, জামগড়া জিরানী, বাড়ইপাড়া এলাকায় সকাল থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজে যোগ দিয়েছেন পোশাক শ্রমিকরা। তবে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় ১ হাজার ৮৬৩টি পোশাক কারখানার মধ্যে ১৬টি কারখানা এখনও বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি কারখানা ১৩ (১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে এবং তিনটি কারখানায় সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও পরে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, আশুলিয়ায় স্বাভাবিকভাবেই কাজ চলছে। সকাল থেকেই পোশাক কারখানাগুলোতে কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। পর্যায়ক্রমে কারখানার মালিকপক্ষ আলোচনা করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করছে। তবে নতুন করে শ্রমিকদের ছাঁটাই করা হচ্ছে। আশুলিয়ার শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম সময়ের আলোকে বলেন, আজও ১৩টি পোশাক কারখানা ১৩ (১) ধারায় বন্ধ আছে। 

এ ছাড়াও তিনটি পোশাক কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। কারখানাগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই কাজ চলছে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে পোশাক শিল্প অস্থিতিশীল করার জন্য বিভিন্ন গার্মেন্টস ভাঙচুরসহ সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। শনিবার দুপুরের দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) আবু বক্কর। এর আগে গত শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর, জামগড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-ঢাকা জেলার ধামরাই থানার মোকামটুলা গ্রামের মো. লাবু খানের ছেলে মো. হাবিব খান (৩১), আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর এলাকার মৃত দুর্জন মোল্লার ছেলে মো. আলকাছ মোল্লা (৩৬), একই এলাকার মৃত মহিবুর রহমান ওরফে মহিউদ্দিনের ছেলে মো. আজাহারুল ইসলাম (৪২), লালমনিরহাট জেলা সদরের হারিভাঙ্গা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে মো. মজিদুল ইসলাম (২৮) ও আশুলিয়ার পবনারটেক এলাকার মৃত সোনা মিয়া তালুকদারের ছেলে রাসেল তালুকদার (৩৫)।

পুলিশ জানায়, আশুলিয়াসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকার গার্মেন্টস শিল্প অস্থিতিশীল করার জন্য একটি গ্রুপ বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছে। গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করতে তারা বিভিন্নভাবে শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে বিভিন্ন গার্মেন্টসে ভাঙচুর করায়। একই সঙ্গে মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাঙচুরসহ গাড়ি পুড়িয়ে অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করে। গতকাল রাতে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার পরিদর্শক আবু বক্কর বলেন, পোশাক শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টির অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গাজীপুরে শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ : গাজীপুর মহানগরীর মোগরখাল এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে একটি গ্রুপ অব কোম্পানির পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। নির্ধারিত সময়ে বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধ না করায় শনিবার সকাল ১০টার দিকে টিএনজেড কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রী, সাধারণ মানুষ ও চালকরা ভোগান্তিতে পড়েন। পরবর্তীতে মালিকপক্ষ বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিলে এক ঘণ্টা পর বেলা ১১টার দিকে সড়ক অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টিএনজেড গ্রুপের চার থেকে পাঁচটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের আগস্ট মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। কয়েক দিন ধরে বেতন পরিশোধের দাবিতে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর তারা কারখানার সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ বকেয়া বেতন বৃহস্পতিবার পরিশোধের আশ্বাস দেয়। এরপর শান্তিপূর্ণভাবে বকেয়া বেতনের জন্য অপেক্ষা করে সারা দিন পার হয়ে গেলেও কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন দেয়নি এবং এ বিষয়ে কোনো কথা না বলে কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়। শনিবার সকালে কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে তারা কলম্বিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেন, কারখানার প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তারা কোনো মাসেই নির্ধারিত সময়ে বেতন পরিশোধ করে না। ১৪ সেপ্টেম্বর আন্দোলন করার পর কারখানা কর্তৃপক্ষ কথা দিয়েছিল ১৯ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতনসহ সব পাওনা পরিশোধ করবে। কিন্তু মাসের ২০ দিন চলে গেলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টালবাহানা করছে। বাধ্য হয়ে আমরা আন্দোলন করছি।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শহিদুল ইসলাম বলেন, বকেয়া বেতন না দেওয়ায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করছেন। ২৪ সেপ্টেম্বর তাদের বকেয়া পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিলে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।

সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close