সড়কের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে মাছ চাষ করায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার অর্ধশতাধিক সড়কে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক এখন মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কগুলোর কোন কোন অংশে অর্ধেক আবার কোন কোন অংশে অধিক বিলীন হয়ে গেছে। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এসব সড়কে চলাচল করা যানবাহনসহ যাত্রীরা।
সরেজমিনে গিয়ে বেহাল দশা দেখা যায় উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ মাচারতা-নয়াকান্দি সড়কটির। মাছের ঘেরের কারণে সড়কের অধিকাংশ জায়গা বিলীন হতে চলছে। ঘেরের ক্ষেত্রে রাস্তার পাশে আলাদা বেড়ি করার নিয়ম থাকলেও তা মানেননি ঘের মালিকেরা। এমনকি সড়কের সুরক্ষায় গাইডওয়াল কিংবা নিরাপত্তা জালও ব্যবহার করেননি। এ সড়কের কান্দি ইউনিয়নের লেবুবাড়ি এলাকায় এলবার্ট বাড়ৈ এর মাছের ঘেরের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কটি। একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তা সুরক্ষার ব্যবস্থা করে ঘেরে মাছ চাষের কথা হলেও মানছেন না তারা।
নয়াকান্দি গ্রামের হাচেন বেপারী বলেন, এই সড়কের পাশেই রয়েছে প্রায় ২০টি মুরগির ফার্ম। ফার্মের খাবার, মুরগি ও ডিম সরবরাহের জন্য নিয়মিত পিকআপ ভ্যান, ট্রাক চলাচল করে এই সড়কে। এলাবার্ট বাড়ৈ এর মাছের ঘেরের কারণে আজ সড়কটি বিলীন হতে চলছে। বিপাকে পড়েছে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ও ব্যবসায়ীরা।
ইলিয়াছ হাওলাদার নামের এক পোল্ট্রি ফার্ম ব্যবসায়ী বলেন, আমার ফার্মে ১৩ হাজার মুরগি রয়েছে। প্রতিদিন এসব মুরগির ডিম বাজারজাত করতে হয়। বর্তমানে এই ঘেরের কারণে সড়কটি এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে এমনকি ভাঙনের ফলে সড়কটিতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।
ঘেরে মাছ চাষ করা এলবার্ট বাড়ৈ বলেন, আমার জায়গা দিয়ে সড়কটি তৈরি হয়েছে। মাছ চাষের ফলে সড়কে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটা ঠিক তবে সড়কটিতে যারা চলাচল করেন তারা সবাই সহযোগিতা করলে সড়কটির মেরামত সহজ হয়।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী রহিম, এমরানসহ অনেকই দাবি করেছেন, যেহেতু সড়কটি এলবার্ট বাড়ৈ এর মাছের ঘেরের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেহেতু তারাই যেন সড়কটি মেরামত করে সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
কোটালীপাড়া থেকে ধারাবাশাইল সড়কে দক্ষিণ ডহরপাড়া জামে মসজিদের সামনে ইদ্রিস শেখের ঘেরের কারণে রাস্তা ভেঙে পড়েছে। ধারাবাশাইল থেকে কান্দি সড়কের তারাকান্দ এলাকায় মঙ্গল বৈদ্যের মাছের ঘেরের কারণে ভেঙে গেছে পিচ ঢালাই সড়ক। অন্যদিকে ধারাবাশাইল-কাচারীভিটা সড়কের মাচারতারা মিরাজ মুন্সী, বাবুল শেখসহ সড়কের উভয় পাশে একাধিক মাছের ঘেরের কারণে সড়কটি ভেঙ্গে গেছে অনেক স্থানে।
কান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তুষার মধু বলেন, সড়কটি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এলজিইডি সড়কটি নির্মাণ করে। বর্তমানে সড়কটির যে অবস্থা তাতে সম্পূর্ণরূপে সংস্কারের যে বিশাল অর্থের প্রয়োজন ইউনিয়ন পরিষদের কাছে তা নেই। শুধু এই সড়কটিই নয় আমার ইউনিয়নসহ উপজেলার সকল ইউনিয়নে অসংখ্য সড়ক মাছের ঘেরের কারণে আজ হুমকির মুখে। মাছ চাষিদের উদাসীনতা ও দায়িত্বহীনতার জন্য আজ গ্রামীণ সড়কগুলো এই অবস্থায় পরিণত হয়েছে।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল আযম বলেন, কোটালীপাড়ায় এলজিইডির ৫০টির অধিক সড়কের বেহাল দশা হয়েছে মাছের ঘেরের কারণে। বারবার ঘের মালিকদের বলা সত্ত্বেও সড়কের পাশে ঘেরে মাছ চাষে মানছেন না সরকারি আইন। বর্তমানে বরাদ্দ না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত এসব সড়ক মেরামতও করা যাচ্ছে না। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে এসব সড়কে চলাচল রত জনসাধারণ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীনুর আক্তার বলেন, একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে ঘের মালিকদের বলা হয়েছে সরকারি আইন মেনে ঘেরে মাছ চাষ করার জন্য। এসব ক্ষতিগ্রস্ত সড়কসমূহ এলজিইডি এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তারা যদি সহযোগিতা চায় তাহলে ঘের মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সময়ের আলো/আরআই
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
বিমানবন্দরে যাত্রীদের মালামাল ছিনতাইয়ের চেষ্টা, গ্রেফতার দুই
ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১২৭ রানে অলআউট বাংলাদেশ
ব্রিটিশ হাইকমিশনের কাছে মানিলন্ডারিংয়ের অনুসন্ধানে সহায়তা চাইলো দুদক
‘বাংলাদেশ নিয়ে অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে’
তারেক রহমানের মামলা মোকাবিলা আইনিভাবে: কায়সার কামাল
সঙ্গে ব্যাগ-পোটলা নিয়ে পূজামণ্ডপে প্রবেশ নয়
ধরাছোঁয়ার বাইরে তারা
ভালো নেই প্রাথমিকের শিক্ষকরা
দুর্নীতিই ছিল তার ধ্যানজ্ঞান
হাতিয়ায় জামায়াতে ইসলামীর ব্যবসায়ী সমাবেশ
কালিহাতীতে কোটা আন্দোলনের মামলায় গ্রেফতার ৩
অচল হচ্ছে লাইটার ট্যাঙ্কার নাশকতার আশঙ্কা
আগে সংস্কার এরপর নির্বাচন