ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় সহযোগিতা কামনা : আইএসপিআর
তিন পার্বত্য জেলায় ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নেওয়ার আশঙ্কা
প্রকাশ: শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:৫১ পিএম  (ভিজিট : ১৭০)
তিন পার্বত্য জেলায় উচ্ছৃঙ্খল জনসাধারণের মধ্যে চলমান সংঘাত-সহিংসতার ঘটনায় ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত সময়ে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও ব্যক্তিবর্গকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। যথাযথ তদন্ত কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের সনাক্তসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিন পার্বত্য জেলায় শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সর্বসাধারণকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছে আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

আইএসপিআর জানায়, খাগড়াছড়ি জেলা সদরে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল জনগণের গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামে একজন যুবক নিহত হন। পরবর্তীতে সদর থানা পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন বৃহস্পতিবার বিকালে দীঘিনালা কলেজ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি দীঘিনালার বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় ইউপিডিএফ’র (মূল) কতিপয় সন্ত্রাসী মিছিলের উপর হামলা করে ২০-৩০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এই প্রেক্ষিতে বিক্ষুব্ধ জনতা বোয়ালখালী বাজারের কয়েকটি দোকানে অগ্নি সংযোগ করে। 

উল্লেখ্য, সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হলে তাদেরকে চিকিৎসার জন্য দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ফায়ার ব্রিগেড ও স্থানীয় জনসাধারণের সহায়তায় আগুন নেভায়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি ও আশেপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেই সাথে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে ক্রমেই পরিস্থিতিকে আরো উত্তেজনাকর করে তুলে। দ্রুততম সময়ে খাগড়াছড়ি জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে জরুরী ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় থেকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, দীঘিনালা ও পানছড়িসহ সকল উপজেলায় যৌথভাবে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সমন্বয়ে টহল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন কমিউনিটি নেতাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে সব পক্ষকে সহিংস কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। 

আইএসপিআর জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জোনের একটি টহল দল রাত সাড়ে ১০ টায় একজন মুমূর্ষু রোগীকে স্থানান্তরের সময় খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর এলাকায় পৌঁছালে অবস্থানরত উত্তেজিত জনসাধারণ ইউপিডিএফ’র (মূল) নেতৃত্বে বাধা সৃষ্টি করে। এক সময় ইউপিডিএফ’র সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর টহল দলের সদস্যদের উপর গুলি করে এবং আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায়। গোলাগুলির ঘটনায় ৩ জন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয় বলে জানা যায়। 

একই ঘটনার ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়িতে স্থানীয় উচ্ছৃঙ্খল জনসাধারণ কয়েকজন যুবকের মোটরসাইকেল থামিয়ে তাদের উপর হামলা ও লাঠিপেটা করে। সেই সাথে উত্তেজিত জনসাধারণ ইউপিডিএফ’র নেতৃত্বে ফায়ার ব্রিগেডের অফিসেও ভাঙচুর করে। 
শুক্রবার সকালে পিসিজেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ কর্তৃক রাঙ্গামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্য বিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে স্থানীয় জনসাধারণ রাঙ্গামাটি জিমনেশিয়াম এলাকায় সমবেত হয়। এ সময় প্রায় ১ হাজার উত্তেজিত জনসাধারণ একটি মিছিল বের করে বনরুপা এলাকার দিকে যেতে থাকে। এসময় উত্তেজিত জনতা বনরুপা বাজার মসজিদ, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, সিএনজি-অটোরিকশা, মোটরসাইকেল এবং বেশকিছু দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে। এতে করে উভয় পক্ষের বেশকিছু লোকজন আহত হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে রাঙামাটি জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close