ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

বৈরী আবহাওয়ায় শঙ্কায় ঝিনাইদহের সবজিচাষিরা
প্রকাশ: বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪:১২ এএম  (ভিজিট : ২৫৪)
বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঝিনাইদহের কৃষিতে মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের বিভিন্ন সবজি ক্ষেত হুমকির মুখে পড়েছে। জমিতে জমে থাকা বৃষ্টির পানির কারণে মরতে বসেছে মরিচ, মুলা, শিম, লাউসহ বিভিন্ন সবজি। যেসব চাষি মরিচ চাষ করেছেন তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির পানি জমিতে জমে থাকার কারণে মরতে শুরু করেছে মরিচ গাছ। 

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী বলেন, ক্ষেতের পানি দ্রুত অপসারণ করা না গেলে মরিচ গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। মারা যেতে পারে অন্যান্য সবজি গাছও। এ জন্য দ্রুত জমির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। সুরক্ষার জন্য গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে কার্বেনডাইজিন ছত্রাকনাশক। 

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫ হাজার ৪২৯ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ থেকে ৯২ হাজার ৯৪৫ দশমিক ৪৮ টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় সবজির আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে। মরিচ ৫২৫ হেক্টর, লাউ ১২৯ হেক্টর, পটোল ৮২ হেক্টর ও গ্রীষ্মকালীন শিম ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, নিচু এলাকার জমিতে জলাবদ্ধতা থাকার কারণে সবজি ক্ষেতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে সব সবজি চাষের ফলন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষকদের। এতে বাজারে দামে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

কৃষি বিভাগ বলছে, বর্তমান মাঠে মরিচসহ যেসব সবজি রয়েছে তা খরিপ-২ মৌসুমের। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এবার সময়মতো চারা রোপণ করতে পারেননি স্থানীয় কৃষকরা। বেশিরভাগ কৃষক সেচের পানিতে চারাগাছ রোপণ করেন। মৌসুমের শুরুর দিকে অপর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে শেষদিকে হয়েছে টানা বৃষ্টি। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সময়ের আগেই গাছের জীবনকাল শেষ হয়ে গেছে। আগাম শীতের সবজি বাজারে তোলা নিয়েও শঙ্কায় আছেন চাষিরা।  

সরেজমিনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বাজার গোপালপুর, নগরবাথান, ডাকবাংলা, হলিধানী, কাসিমপুর, মধুহাটি, বেড়াশুলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবজি চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। এসব এলাকায় কাঁচামরিচ, শিম, লাউ, পটোল, বেগুন, শসা, মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়। কৃষকরা জানান, দীর্ঘ সময় ধরে আবহাওয়ার বৈরিতা লেগেই আছে। কখনো হালকা বা মাঝারি আবার কখনো মুষলধারে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। মাঝে মাঝে রোদ উঠলেও আবার অঝোরে বৃষ্টি ঝরেছে। এতে সবজি ক্ষেতে পানি জমে যায়। গাছের গোড়ার মাটি স্যাঁতসেঁতে থাকায় ছত্রাক জাতীয় রোগসহ ফসলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ে কাঁচামরিচ গাছ। নগরবাথান, হলিধানী, বাজার গোপালপুর, দুর্গাপুর, চোরকোল, মামুনশিয়া, কামতা ও কুবিরখালি এলাকার অনেক মরিচ গাছই মরে গেছে। কোথাও আবার মরিচ গাছের পাতা কুঁচকে শুকিয়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে ফলন। এ ছাড়া শিমের ফুল ঝরে যাচ্ছে। পাতা শুকানো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মুলা গাছ।

সদর উপজেলার খাজুরা গ্রামের বাসিন্দা ইয়ারুল বলেন, দুই বিঘা জমিতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে মরিচ গাছ লাগিয়েছিলাম। লাখ খানেক টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। এরপর এত বৃষ্টি হয়েছে যে, গাছের গোড়ায় পচন ধরে যায়। দোকান থেকে এনে ওষুধ দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। সব গাছ মরে গেছে। চোরকোল গ্রামের আবদুল মতিন বলেন, বিরূপ আবহাওয়ার কারণে আমার দুই বিঘা জমির সব মরিচ গাছ মরে গেছে। শুধু আমার নয়, আমাদের এলাকার আরও অনেক চাষির মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। ক্ষতির হাত থেকে বাঁচার আশায় কেউ কেউ তাড়াহুড়ো করে মরিচ তুলে ফেলছেন।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close