প্রকাশ: সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১১:০০ এএম (ভিজিট : ১৫২)
টানা দু’দিনের ভারী বর্ষণের পর নোয়াখালীতে আবারও সূর্যের দেখা মিলেছে। এতে জনমনে কিছুটা স্বস্তি দেখা দিয়েছে। কিছু দিন আগে নোয়াখালীর স্মরণকালের বন্যার রেশ না কাটতেই দু’দিনের ভারী বর্ষণের ফলে আবারও বন্যার মতোর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো। এতে বানভাসিদের মাঝে আতঙ্ক ও ভয় বিরাজ করছিলো। কিন্তু সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সূর্যের দেখা মিলায় বন্যার কবলে পড়া মানুষরা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে নোয়াখালীতে দু’দিন ভারী বর্ষণ হয়েছে। এতে করে জেলায় আবার ভারী জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিলো। এখন নিম্নচাপটি চলে যাওয়ায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। তবে মৌসুমি হালকা বৃষ্টি হতে পারে। একই সাথে হালকা বাতাসও বয়ে যাবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলা শহরসহ আটটি উপজেলা এখনো পানিতে নিমজ্জিত। কোথাও হাঁটু সমান পানি, আবার কোথাও এর চাইতে একটু কম। তবে সামগ্রিকভাবে যে জলাবদ্ধতা রয়েছে তা জনজীবনে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে অফিসগামী, শ্রমজীবী, কর্মজীবী , স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বেশি সমস্যায় রয়েছেন। তারা প্রতিদিন পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের দেখা দিয়েছে পানিবাহিত অনেক রোগ।
লক্ষীনারায়নপুর এলাকার আনিসুর রহমান নামে এক চাকরিজীবী বলেন, প্রতিদিন পানি মাড়িয়ে অফিসে যেতে হয়। আবার আসার সময় রাত হয়ে যাওয়ায় সড়কে খানা খন্দ থাকায় চলাচলে বিঘ্ন পেতে হয়। রোদ দেখা দেয়ায় মাইজদী হাউজিং এলাকার জলি নামে আরেকজন সরকারি চাকরিজীবী বলেন, প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে যেতে হয়। জলাবদ্ধতার কারণে সড়ক খারাপ হওয়ায় আমাদের এদিকে যানবাহন আসেনা। ফলে অনেকটা পথ পানি মাড়িয়ে যেতে হয়। এতে করে অসুস্থও হয়ে গেছি।
রাব্বানী নামে একজন অভিভাবক বলেন, সন্তানকে স্কুলে নিতে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার কারণে খুবই সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া পানিতে নামায় তাদের নানা ধরণের চর্ম রোগ দেখা দিয়েছে।
তারেক নামে আরেকজন বলেন, বন্যার পর আমরা কিছুটা আশার আলো দেখছিলাম, কিন্তু আবার নতুন করে আবার ভারী বর্ষণের ফলে জলাবদ্ধতা কঠিন রূপ নিয়েছে। আগের পানিও তেমন না সরায় এখন পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে। মনে হয়না খুব সহসা জলাবদ্ধতা থেকে আমরা মুক্তি পাবো।
এজাজ আহমেদ নামে একজন বলেন, পানি নামবে কিভাবে? প্রভাবশালীরা খাল-জলাশয়-নালাসহ যেসব জায়গা দিয়ে পানি নামে সেসব জায়গা দখল করে বহুতল ভবন করেছে তাতে পানি নামার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এই পথগুলো অপসারণ করা না হলে নোয়াখালী শহরে জলাবদ্ধতার অবসান হবেনা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলাতে এখনো প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। ৩৫০টির বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি বানভাসি রয়েছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, বৃষ্টি না হলে আশা করছি পরিস্থিতির উন্নতি হবে। যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে তা অপসারণ করে পানি নামার পথ সুগম করা হবে। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা বানভাসিদের জন্য খাদ্য ও নগদ টাকা দেয়া হয়েছে।
সময়ের আলো/আরআই