ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

জীবন গঠনের শ্রেষ্ঠ মডেল
প্রকাশ: সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:২৭ এএম  (ভিজিট : ২২৮)
মানুষ স্বভাবতই সফল মানুষকে অনুসরণ করে। সবাই চায় সুখী মানুষের দেখাদেখি জীবনের পথ সাজাতে। যার দৈহিক কাঠামো সুন্দর, আচার-ব্যবহার ভালো, হাসি-খুশি ও বাকপটু, সবার জন্য যে নিবেদিত; তার প্রতি সব মানুষের থাকে আলাদা আকর্ষণ। এমনই সর্বগুণে সমৃদ্ধ ও গুণান্বিত মানুষ ছিলেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য তিনি এক অনুপম আদর্শ। তিনি ছিলেন শিশুর আদর্শ, যুবকের আদর্শ, সৈনিকের আদর্শ, সেনাপতির আদর্শ, স্বামীর আদর্শ, পিতার আদর্শ, নানার আদর্শ, ব্যবসায়ীর আদর্শ, শিক্ষকের আদর্শ ও রাষ্ট্রনায়কের আদর্শ। পৃথিবীর অন্য কোনো মহামানবের ভেতরে এমন অপূর্ব দৃষ্টান্ত পাওয়া যাবে না, যার সমাহার ও সংমিশ্রণ শুধু এই মহামানবের জীনাদর্শেই বিদ্যমান। তাঁর অনুসরণ-অনুকরণ করার মধ্যে মানব জীবনের ঐকান্তিক সফলতা নিহিত। রাসুল (সা.) পৃথিবীতে আগমন করেছেন সচ্চরিত্রের বিকাশ সাধনের জন্য। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আমাকে সচ্চরিত্রের পূর্ণতা সাধনের জন্যই প্রেরণ করা হয়েছে।’ (জামেউল আহাদিস : ৬৭২৯)

আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর জীবনাদর্শ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা দিয়েছেন, ‘আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী’ (সুরা কালাম : ৪)। অর্থাৎ নৈতিক চরিত্রের সর্বোচ্চ মানের ওপর আপনি অধিষ্ঠিত। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নৈতিক চরিত্রের মান নিয়ে মক্কার মুশরিকদেরও অভিযোগ ছিল না। তাঁর বিশ্বস্ততা ও উন্নত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে তাদের ছিল না কোনো দ্বিমত। চরম শত্রুও তাকে মিথ্যুক বা অসৎ বলতে পারেনি। তাঁর সার্বিক গুণপনায় মন্ত্রমুগ্ধ ছিল সবাই। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নৈতিক চরিত্রের সর্বোত্তম সংজ্ঞা দিয়ে হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, ‘কুরআনই ছিল তাঁর চরিত্র।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) দুনিয়ার তাবৎ মানুষের সামনে শুধু কুরআনের শিক্ষাই পেশ করেননি। বরং তিনি নিজেকে কুরআনের জীবন্ত নমুনা হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন। কুরআন মাজিদে যে নৈতিক গুণাবলিকে উৎকৃষ্ট কাজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে, সেসব গুণে তিনি ছিলেন পরিপূর্ণভাবে গুণান্বিত।

শুধু পৃথিবীর জীবনে নয়, পরকালের অনন্ত জীবনেও সফলতার জন্য তাঁর আদর্শের পূর্ণ অনুসারী হতে হবে। তাঁর আদর্শ বাদ দিয়ে অন্য কারও আদর্শ অনুসরণ করে কোনো জীবনেই সফল হওয়া যাবে না। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, সে অবশ্যই মহাসাফল্য লাভ করবে’ (সুরা আহজাব : ৭১)। জান্নাত প্রাপ্তির পূর্বশর্ত হিসেবে রাসুল (সা.)-এর অনুকরণের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবহমান। আর সেটিই প্রকৃত সফলতা।’ (সুরা নিসা : ১)

মানুষের অনুসরণীয় মডেল হিসেবেই তাঁকে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহর ভালোবাসা প্রাপ্তি মহানবীর পরিপূর্ণ আনুগত্য ও অনুসরণের ওপর নির্ভরশীল। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘হে রাসুল! আপনি লোকদের বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তা হলে আমার অনুসরণ করো। তা হলে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসবেন’ (সুরা আলে ইমরান : ৩১)। রাসুলকে ভালোবাসার নিদর্শন হচ্ছে তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ করা। তাঁর সুন্নত অনুযায়ী জীবনযাপন না করে নিজেকে আশেকে রাসুল বলে দাবি করা অর্থহীন। রাসুল (সা.)-কে জীবনের আদর্শ হিসেবে মেনে নিয়ে সার্বিকভাবেই তাঁকে অনুসরণ করা উচিত। আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর প্রদর্শিত সুন্নত অনুসরণে পার্থিব ও পরকালীন জীবনে বয়ে আনে শান্তি। মহান আল্লাহ সবাইকে সুন্দর জীবন গঠনের তওফিক দিন।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close