চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুটি মামলায় জামিন না পেয়ে হট্টগোল করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে বিএনপি নেতাকর্মীরা ওই ম্যাজিস্ট্রেটের অপসারণ চেয়ে ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেন। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদালতের বিচার কক্ষেই এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, অস্ত্র ও বিস্ফোরক মামলায় ৩৬ জন অভিযুক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হন। এসময় ৩৩ জন আসামির জামিন বহাল রাখলেও গরহাজিরের জন্য ওয়ারেন্ট ভুক্ত ৩ জন অভিযুক্তের জামিন আদেশ বাতিল করেন আদালত।
জামিন বাতিল হওয়া ওই তিন বিএনপি নেতা হলেন- জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন, সাবেক শ্রমিক দল নেতা আব্দুস সালাম ও জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ।
এ সময় দেখা যায়, আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করার পর বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন আদালতে উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠলে একপর্যায়ে এজলাস থেকে নিজের খাস কামরায় চলে যান বিচারক ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুমার শিপন মোদক। এ সময় খাসকামরার বাইরে হট্টগোল ও চিৎকার শুরু করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।
তবে আদালত সূত্রে জানা গেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সরকারের রাজনৈতিক সকল মামলা প্রত্যাহারের নির্দেশের আলোকে এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জামিনের আবেদন ও হাজিরা উহ্য রেখে ও নথিতে না দেখিয়ে পরিস্থিতির অবসান ঘটানো হয়। অর্থাৎ আদালতে আসামিদের জামিন বাতিল এবং হাজিরা উপস্থাপন দেখানো হয়নি।
তবে এই তিনটি মামলার চার্জশিট আসার কারণে একটি মামলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ও অপর দুটি মামলা জেলা দায়রা জজ আদলতে বদলি করা হয়।
পরে বিএনপি নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করে আদালত থেকে বেরিয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অপসারণের জন্য ৭ দিনের আল্টিমেটাম দেন। এসময় আদালতে ছিলনা পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য। এমনকি উপস্থিত পুলিশকেও নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যায়।
এদিকে, বিএনপি নেতাকর্মীদের এই হট্টগোলের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম টিপু এ বিষয়ে জানান, ‘যে জামিন আবেদন দিয়েছিলাম সেটি আর হয়নি, সেটিকে টেনে (সরিয়ে) নেয়া হয়েছে। জামিন না মঞ্জুর করার বিষয়ে তিনি জানান, এই বিষয়টিকে এখন উহ্য রেখে দেন। ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি আদালতের সামনে উপস্থিত হওয়ার পরও ছেড়ে দেয়া হল কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আসামি উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি আদালতের নলেজে দেয়া হয়নি।’
তবে বিএনপি নেতাকর্মীদের অপর আইনজীবী ফরিদ উদ্দীন বলেন, তিনটি মামলায় জামিন আবেদন করলেও; একটিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন দেয়। দুটি মামলায় জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। এরপরই হট্টগোল শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, মামলা দুটি অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে করা। এগুলো রাজনৈতিক মামলা হওয়ায় প্রত্যাহার করার নির্দেশ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটেই জামিনের আবেদন করা হয়।
এদিকে যুবদল নেতা তাবিউল ইসলাম তারিফ বলেন, মামলাগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা। এগুলো মিথ্যা মামলা। দুটি মামলায় পুলিশ বাদী হয়ে করা। এই মামলাতেও জামিন না দিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। পরে আদালত চত্বরে বিক্ষোভ করে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অপসারণ দাবি করেন। অপসারণের জন্য ৭ দিনের সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়।
সময়ের আলো/আরআই