ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নাগরিকসেবা
প্রকাশ: রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:২১ এএম  (ভিজিট : ৪৪৮)
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বদলে গেছে দেশের প্রেক্ষাপট। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রশাসনে বরখাস্ত, বদলিসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর অংশ হিসেবে অপসারণ করা হয়েছে বিগত সরকারের সময় নির্বাচিত সব সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামীপন্থি জনপ্রতিনিধিরাও পটপরির্বতনের পর গা-ঢাকা দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে কাজকর্ম চালাতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে এতে সংশ্লিষ্ট অফিসগুলো খোলা থাকলেও থমকে গেছে কাজের গতি। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় সরকারের সব নাগরিকসেবা ও উন্নয়ন প্রকল্প।

দেশের কয়েকটি সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদ ঘুরে দেখা গেছে ট্রেড লাইসেন্স, জাতীয়তা সনদ, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদ, প্রত্যয়ন, নাগরিকত্ব সনদসহ ভবনের অনুমোদন সংক্রান্ত নাগরিকসেবার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন এসে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সারা দেশে নির্বাচিত ৩২৩ পৌরসভার মেয়র ও ৬০ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে অপসারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর এক দিন পর পৃথক এক প্রজ্ঞাপনে দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে। সেই সঙ্গে সব সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে একসঙ্গে একাধিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছেন প্রশাসকরা। প্রয়োজনীয় সময় দিতে না পারায় ঢিমেতালে চলছে নাগরিকসেবা। রাজধানী ঢাকার দুই সিটি কপোরেশন এলাকায় নাগরিকসেবা ঠিক থাকলেও অন্যান্য সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোতে ব্যাহত হচ্ছে নাগরিকসেবা।

উত্তরের জেলা গাইবান্ধার সাত উপজেলা পরিষদের ছয়টিতেই আওয়ামী লীগ এবং একটিতে জাতীয় পার্টি সমর্থিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এসব উপজেলায় নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যানদের অধিকাংশই ছিলেন আওয়ামী লীগের। জেলার চারটি পৌরসভার দুটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং অন্যটিতে জাতীয় পার্টি থেকে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। জেলার সাত উপজেলায় ইউনিয়ন রয়েছে ৮১টি। এসব ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন স্তরের পদ-পদবিতে ছিলেন। এ ছাড়া গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের মেয়র, কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে আসছিলেন না। এমন বাস্তবতায় গত ১৯ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জারি করা পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপনে জেলা-উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ করে সরকার। গাইবান্ধা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের স্থলে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পান জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদগুলোর প্রশাসকের দায়িত্ব নেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকরা পৌরসভাগুলোর প্রশাসক হিসেবে আসেন। প্রশাসক নিয়োগের পর জেলা-উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সেবা কার্যক্রম বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময় থেকে কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের সেবা কার্যক্রম।

উপজেলা পরিষদের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পগুলোর আওতায় সুবিধাভোগীরা বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধী ইত্যাদি ভাতা নিয়মিত পেলেও সংসদ সদস্যের বিশেষ বরাদ্দ ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সাধারণ বরাদ্দের সুবিধাপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ৫ আগস্টের পর গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) এবং গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা-কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পগুলো স্থগিত আছে। এদিকে দলীয় প্রভাবশালীরা কাজের টাকা উত্তোলন করে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সটকে পড়ায় চলমান প্রকল্পগুলোর কাজও বন্ধ হয়ে আছে। অন্যদিকে উপজেলা পরিষদের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পন্ন করলেও গত জুন মাসের পর অর্থছাড় না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঠিকাদাররা। এদিকে গাইবান্ধার চারটি পৌরসভায় আবর্জনার গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছে। বেশিরভাগ এলাকাতেই দেখা মিলছে না পরিচ্ছন্নতাকর্মীর, জ্বলছে না সড়কবাতি। এ ছাড়া বিভিন্ন নাগরিক সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশ সনদ ইস্যুসহ অনলাইনে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের মতো সেবাগুলো চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে। এ জন্য মেয়রের আনুকূল্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যাপকসংখ্যক কর্মী ছাঁটাই হওয়ায় জনবল সংকটকে দুষছেন পৌর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম মহানগরীর দুই প্রতিষ্ঠানে কাজ চলছে ঢিমেতালে। পাশাপাশি নগরীর বাইরে ১৫ পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ হলেও বিভিন্ন কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে নাগরিকসেবা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমেদ। চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা। তিনি গত সোমবার থেকে জেলা পরিষদের পাশাপাশি চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রশাসকেরও দায়িত্ব পালন করছেন। চট্টগ্রামে সদ্য দায়িত্ব পাওয়া প্রশাসকরা সকালে অফিসে প্রবেশ করে সর্বোচ্চ দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন। এরপর নিজের মূল কাজে ফিরে যান। স্বভাবতই এতে কাজকর্মের গতি কমে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে চেয়ারম্যান দায়িত্ব পালনকালে সকাল ১০টায় অফিসে প্রবেশ করলে রাতেও দাফতরিক কাজ শেষ করতে পারতেন না। প্রায় সময় তিনি অফিস থেকে বের হতেন রাতে। এখন প্রশাসক হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি একসঙ্গে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বও সামাল দিচ্ছেন। এ জন্য তিনি প্রতিদিন জেলা পরিষদে এলেও বেশি সময় থাকতে পারেন না। আমরা জরুরি ফাইলপত্র নিয়ে জেলা প্রশাসনে তার অফিসে চলে যাই। একই অবস্থা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনেও (চসিক)। সেখানে মেয়রের স্থলে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমদ। তিনি প্রতিদিন দফতরে এলেও বেশি সময় থাকেন না। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রশাসক মূলত রুটিন কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন। নীতিনির্ধারণ সংক্রান্ত বড় কাজগুলোতে এখনও হাত দেননি। তবে দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের সমস্যা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমদ। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি আমি চসিকের প্রশাসকের দায়িত্বও পালন করছি। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ভোগান্তি বা সেবাপ্রার্থীরা সেবা পাচ্ছে না এ ধরনের কিছু হয়নি।

এদিকে পৌরসভাগুলোর দায়িত্বে প্রশাসক দেওয়া হলেও সেবাপ্রার্থীরা বিভিন্ন স্থানে সেবা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বোয়ালখালী সংবাদদাতা জানান, বোয়ালখালী পৌরসভায় প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী। তিনি প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর মাত্র এক দিন অফিস করেছেন। এরপর তিনি ছুটিতে চলে যান আর অফিসে আসেননি। তিনি অফিস না করায় জন্মনিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, ওয়ারিশ সনদ এবং ভবনের অনুমোদন সংক্রান্ত নাগরিকসেবার কাজ ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন সেবাপ্রার্থীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। তার অফিসের কর্মরত কর্মকর্তারা জানান, তিনি অসুস্থতার কারণে ছুটি নিয়েছেন। তাই বেশ কয়েক দিন কর্মস্থলে নেই।

বরিশাল সিটি কপোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত গত ৫ আগস্টের পর গা ঢাকা দিলে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনারকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। মেয়রের পাশাপাশি ৩০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাও গা ঢাকা দিয়েছেন। এতে করে ব্যাহত হচ্ছে নাগরিকসেবা। নগরবাসী বলছে, প্রশাসক নিয়োগের পর পানির বিল, ট্রেড লাইসেন্সসহ বেশ কিছু কাজ তারা করপোরেশন দিয়ে করতে পারলেও ওয়ার্ডভিত্তিক কাজগুলো হচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, ড্রেনের ময়লা পরিষ্কার না করায় অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। মশার উৎপাত বেড়েছে। এ ছাড়া জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদদের জন্য ভোগান্তি হচ্ছে। নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আশরাফ আলী বলেন, মেয়র নেই, কাউন্সিলর নেই এতে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। ওয়ার্ডের সচিব নাম-ঠিকানা রাখলেও তার পেছনে ঘুরতে হচ্ছে। এভাবে নাগরিকসেবা হতে পারে না। বিষয়টি দ্রুত সমাধান দরকার। এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কপোরেশনের সচিব মাসুমা আক্তার বলেন, বিসিসির দৈনন্দিন কাজ চলছে। উন্নয়নকাজগুলো আপাতত বন্ধ রয়েছে। এগুলো দ্রুত চালু করা হবে।

রাজশাহী জেলায় ৯টি উপজেলা ও ১৪টি পৌরসভা চলছে প্রশাসকের মাধ্যমে। প্রশাসক থাকার পরও কিছু উপজেলা ও পৌরসভায় সেবা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন কয়েকজন সেবাপ্রত্যাশী। বেশ কয়েকটি পৌরসভায় দেখা যায়, প্রশাসক সময়মতো না আসায় নাগরিকসেবা ব্যাহত হচ্ছে। পৌরসভার বাসিন্দারা বলেন, ট্রেড লাইসেন্স, জাতীয়তা সনদ, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু নিবন্ধনসহ বিভিন্ন সনদ তার স্বাক্ষর ছাড়া দেওয়া হচ্ছে না। রাজশাহীর নওহাটা পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায়, নাগরিকত্ব সনদ নিতে এসে পৌর ভবনের নিচে বসে আছেন রাজু আহম্মেদ নামের একজন সেবাগ্রহীতা। তিনি বলেন, আমার জরুরিভাবে নাগরিকত্ব সনদ লাগবে। কিন্তু এসে দেখি কাউন্সিলর নেই। আগেও দুদিন এসে ঘুরে গেছি। রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা এ কাজগুলো দেখছেন যেন মানুষদের সমস্যা না হয়। সবকিছু সামলিয়ে তারা সেখানেও সময় দিচ্ছেন। এতে কিছুটা সমস্যা হলেও তা সাময়িক।

তবে কবে নাগাদ এসব সমস্যা সমাধান হবে তা এখনও অনিশ্চিত। কারণ এসব সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন নির্বাচন। কিন্তু ৫ সেপ্টেম্বর কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) একযোগে পদত্যাগ করায় সাংবিধানিক এ প্রতিষ্ঠানে শূন্যতা তৈরি হয়েছে। নতুন ইসি গঠনের বিষয়ে এখনই কিছু ভাবছে না অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের বিষয়টি সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায় নেই। প্রয়োজনীয় সংস্কার করার পর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হতে পারে বলে জানা গেছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন সংস্কার করার কথা বলেছে। সংস্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারকে। তবে কবে ও কীভাবে এ সংস্কার কার্যক্রম শুরু হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। কবে নাগাদ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন কবে হবে এসব বিষয়ও জানতে বদিউল আলম মজুমদারকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে ইসি সচিব শফিউল আজিম সময়ের আলোকে বলেন, নতুন ইসি গঠন নিয়ে উপদেষ্টা মহলে এখনও কোনো আলোচনা হয়নি। তাদের কাজের অগ্রাধিকার তালিকায়ও নেই। একদম প্রাথমিক পর্যায় রয়েছে।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ডা. তোফায়েল আহমেদ সময়ের আলোকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার এসে একটা বড় ধরনের শূন্যতার মধ্যে পড়েছে। শূন্যতাটা এক ক্ষেত্রে নয়, অনেক ক্ষেত্রে। এ রকম শূন্যতার ভেতর বাংলাদেশে নয় শুধু, পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো সরকার কাজ শুরু করেনি। এ রকম পরিস্থিতিতে একটা দেশের সরকারের কাজ চালানো খুবই মুশকিলের ব্যাপার। কীভাবে তারা কাজ গুছিয়ে নেবে আমি বুঝতে পারছি না।

তিনি বলেন, যাদের পরিষদের দায়িত্ব দিয়েছে, তারা বুঝতে পারবেন; এটি কিন্তু সরকারি অফিসের কাজের মতো নয়। এই কাজে মানুষের অংশগ্রহণ থাকে। এখানে যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের কাজে লাগানো যায় কি না এটি চিন্তা করা উচিত ছিল। প্রথমে সরকার একটা সাধারণ নোটিস দিতে পারত, যারা এক সপ্তাহের মধ্যে যোগ দিতে চান, যোগ দিন। যোগ না দিলে আসনগুলো শূন্য ঘোষণা করা হবে। শূন্য আসনগুলোতে একটা সময় দিয়ে উপনির্বাচন দেওয়া যেত। তা হলে এ সময়ে একটা নির্বাচন করে কিছু লোক এলে কাজ চালাত। এর মধ্যে সরকার স্থানীয় সরকারকে স্থায়ীভাবে সংস্কারের জন্য কমিটি বা কমিশন করে কাজ শুরু করতে পারত।

এ স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীদের কাজের তো নিজস্ব ধারা আছে। তাদের অতিরিক্ত কাজ হিসেবে তারা শুধু অফিসটা পাহারা দেবেন। এর বেশি তারা করতে পারবেন না। তবে এই সময়ে মানুষদের কথা শোনার প্রয়োজন আছে।



সময়ের আলো/আরএস/ 





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close