ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

‘গরমে জাহান যাওয়া আইসা করে’
প্রকাশ: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:৫৪ এএম  (ভিজিট : ২৬৮)
নামাজে বসবেন বিদ্যুৎ নাই, ভাত খাবেন বিদ্যুৎ নাই। পড়ার টেবিলে বাচ্চারা বসবে বিদ্যুৎ নাই। দিনশেষে পরিশ্রান্ত শরীর নিয়ে বিছানায় যাব তখনও লোডশেডিং। মাস শেষে বিদ্যুৎ বিলটা ঠিকই আসে। বিষিয়ে উঠছে মনমেজাজ। ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে এভাবেই কথাগুলো বলেন সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা বিদ্যুৎ গ্রাহক নজরুল ইসলাম।

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে চলছে অসহনীয় তাপপ্রবাহ। দিনে প্রখর রোদ, রাতে ভ্যাপসা গরম। পিছু ছাড়ছে না লোডশেডিং। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টায় কতবার যে বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে তা নেই কারো জানা। এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাবাসী।

সুন্দরগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় বিদ্যুৎ গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে প্রায় এক লাখ পঁয়ত্রিশ হাজার। লাইন দুই হাজার কিলোমিটার। বিদ্যুৎ সরবরাহে ফিডার আছে ১২টি। এর মধ্যে ৬টি আছে সুন্দরগঞ্জে। ৫ নম্বর ফিডার (ই) দিয়ে চলে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা ও বাজার। ১ নম্বর ফিডার (ডি) দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় উত্তর বামনজল, মীরগঞ্জ বাজার, পুরো তারাপুর ইউনিয়ন, ঘগোয়াসহ পীরগাছা উপজেলার কিছু অংশ ও বাকি ৪টি ফিডার দিয়ে অন্যান্য এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বাকি ৬টি ফিডার আছে সতিরজানে। এ ৬টি দিয়ে বালারছিড়া, বেলকা ও মজুমদারসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়া আর বিদ্যুৎ বিল বেশি আসায় ক্ষোভ জানিয়ে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অইদোত সারা দিন কাম করি। গরমে জাহান যাওয়া-আইসা করে। বাড়িত আসি যে একনা জুড়ামো সেটাও হয় না। খালি কারেন যায় আর কারেন যায়। কারেন না থাইকলে বিল যে কম করি আইসপে সেটাও নাই। বিল ভালোই আইসে। মোর ধারণা, মিটারগুলাতে ওমরা ভেজাল করি থুইছে।’

আরেক বিদ্যুৎ গ্রাহক উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ফলগাছা গ্রামের মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘ডিজিটাল মিটার লাগানোর পর থেকে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসতেছে। এর আগের মিটার থাকাকালীন এত বেশি বিদ্যুৎ বিল আসত না। কোনো কারণ ছাড়াই সেই মিটারটা খুলে নিয়ে গেছেন পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের লোকজন। দিনে-রাতে সমানতালে দীর্ঘ সময় ধরে লোডশেডিং। তারপরেও বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে প্রত্যেক মাসে। আমার ধারণা, মিটারে কোনো ঝামেলা আছে।’

এ বিষয়ে রংপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১ সুন্দরগঞ্জের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুল বারী লোডশেডিং হচ্ছে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এখানে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২১ মেগাওয়াট বিদ্যুতের দরকার। কিন্তু সেখানে বরাদ্দ পাই ১০ মেগাওয়াট। এ কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। এখানে আমাদের করার কিছুই নাই।’

বর্তমান ব্যবহৃত মিটারগুলোতে কোনো ধরনের ঘাপলা আছে কি না জানতে চাইলে ডিজিএম বলেন, ‘কোনো ঘাপলা নেই। তবে আগের মিটারগুলো ছিল অ্যানালগ। বর্তমানগুলো ডিজিটাল। আর এ মিটার দুটির মধ্যে পার্থক্য আছে। ডিজিটাল মিটারের সেনসিটিভিটি এত বেশি যে মিটারে থাকা লাল বাতিটা জ্বললেও মিটারের চাকা ঘুরবে। অর্থাৎ বিল উঠবে। আর অ্যানালগ মিটারগুলোতে মোবাইল ফোন চার্জ দিলেও মিটারের চাকা ঘুরত না। অ্যানালগ পাল্টে ডিজিটাল মিটার স্থাপন এটি সরকারি সিদ্ধান্ত।’


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close