ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

প্রতি বছর গড়ে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এখন টাইলসের গোডাউন
প্রকাশ: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:০৯ এএম  (ভিজিট : ১৭২)
বরিশালে ১৪ বছর ধরে পড়ে আছে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের আওতাধীন বরিশাল মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্রটি। স্থানীয়দের দাবি, প্রভাবশালীদের যোগসাজশের কারণেই বন্ধ হয়েছে এটি। এতে করে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আর মৎস্য আড়তদাররা জানিয়েছেন অতিরিক্ত ভ্যাট ধার্য করাসহ ব্যবসার পরিবেশ না থাকায় আগ্রহী নন তারা।

অথচ দুই বছর জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের হাঁকডাকে মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্রটি সরগরম ছিল। কিন্তু এখন তা গোডাউন ও অবৈধ দখলদারদের দখলে পরিণত হয়েছে। ফলে নষ্ট হচ্ছে সরকারি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও মালামাল। মাছের শেডগুলো দখলে নিয়ে হয়েছে রিকশা, ভ্যান ও ভাঙারি কারখানা। তবে গেটের সামনে এখনও শোভা পাচ্ছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইনবোর্ডটি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৯৮৫-৮৬ সালে বান্দরোডে কীর্তনখোলা নদীর তীরে ১ দশমিক ২৩ একর জমিতে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) কেন্দ্রটি নির্মাণ করে। কিন্তু তখন প্রভাবশালীদের জন্য সেটি চালু করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কেন্দ্রটি চালু হয়। ওই সময় ব্যবসায়ীদের নিয়মিত মাছ বেচাকেনার ফলে কেন্দ্রটি জমজমাট হয়ে ওঠে। দুই বছরে গড়ে প্রায় তিন কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়।

২০০৯ সালের ১৩ জুলাই ব্যবসায়ীরা ফিরে যান পোর্টরোডের বেসরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। এখন পর্যন্ত সেখানেই চলছে মাছ বেচাকেনার কাজ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় কেন্দ্রটির মূল স্থাপনা, ডরমিটরি ভবন, অফিস, আড়ত শেড, বরফকল, গভীর নলকূপ, হিমঘর, গাড়ি পার্কিং স্টেশনসহ স্থাপনা ও আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। অনেকে হয়েছেন বেকার ও কর্মহীন। তাই এটি চালুর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় কালাম, সবুজ ও নাছিম জানান, একসময়ে সরকারি এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি জমজমাট ছিল। এখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ছিল। কিন্তু এখন এটি পরিত্যক্ত। এখানে টাইলস কোম্পানি ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছে। এতে কয়েকশ শ্রমিক কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রকে ঘিরে গড়ে ওঠা ব্যক্তি মালিকানাধীন বরফকলও আজ বন্ধের পথে। তাদের অভিযোগ প্রভাবশালীদের যোগসাজশে বন্ধ হয়েছে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটি। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা। তাই দ্রুত বাজারটি পুনরায় চালুর দাবি জানান।

এ বিষয়ে বিএফডিসির অফিস সহায়ক শফিকুল ইসলাম বলেন, এটি যাতে বিলীন হয়ে না যায় তাই গোডাউন হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তাতে কিছুটা হলেও আয় হচ্ছে। এটি চালু থাকা অবস্থায় ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত দুই বছরে বরিশাল মৎস্য অবতরণ ও পাইকারি মৎস্য বাজার কেন্দ্রটি থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। বর্তমানে এখানে টাইলসের দুটি গোডাউন ভাড়া দেওয়া হয়েছে। সরকারি অবতরণ কেন্দ্রটিতে জায়গা সংকটসহ পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে পোর্টরোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মাছের ব্যবসা শুরু করার কথা জানান মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন অতিরিক্ত ভ্যাট ধার্য করায় লোকসানে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। তা ছাড়া বর্তমানে সেখানে ব্যবসার পরিবেশ নেই বলে দাবি তাদের।

এদিকে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি চালুর জন্য ব্যবস্থাপকসহ ৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও বর্তমানে পাথরঘাটার ব্যবস্থাপক ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে রয়েছেন। আর গার্ডসহ চারজন কর্মচারী পুরো অবতরণ কেন্দ্রটির দেখভাল করেন।

জানতে চাইলে পোর্টরোড মৎস্য আড়দার মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ ইয়ার হোসেন জানান, জায়গা সংকট, বরফ সংকটসহ নানা সংকট আছে বাজারটিতে। বাজারটি ব্যবসার জন্য উপযোগী নয়। নেই কোনো জেটির ব্যবস্থা। তা ছাড়া সেখানে সরকার অতিরিক্ত ভ্যাট ধার্য করেছে। এতে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। জানতে চাইলে বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বরিশালের জেলা প্রশাসক।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close