হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে তাকে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। জ্বরের কারণ খুঁজতে থরো চেকআপসহ স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে বৈঠক করে নতুন কয়েকটি পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে সঙ্গে বাসায় নেওয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বোর্ডের দুজন সদস্য সময়ের আলোকে এসব তথ্য জানান।
মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, জ্বর আসায় ম্যাডামকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। জ্বর আসার কারণ খুঁজতে থরো চেকআপসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অন্য কোনো জটিলতা নতুন করে তৈরি হয়নি। তিনি কেবিনে চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে আছেন। অবস্থার উন্নতি হলে বাসায় নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, বোর্ড প্রথমে ম্যাডামকে যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। উন্নত চিকিৎসায় এখন যুক্তরাজ্যে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। লন্ডনে ম্যাডামের ছেলে ও ছেলের বউসহ পরিবারের অনেকে রয়েছেন।
বোর্ডের আরেকজন সদস্য ডা. আল-মামুন জানান, হঠাৎ বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় খালেদা জিয়াকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাতে বোর্ড বসে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছে। রিপোর্ট পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন। কিছুটা সুস্থ হলেই বাসায় ফিরবেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাকে বিদেশ নেওয়ার চেষ্টা করছি। বিমানে ওঠার জন্য ফিজিক্যালি তিনি এখন পর্যন্ত ফিট নন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যেই বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করছে মেডিকেল বোর্ড।
তিনি বলেন, ম্যাডাম গত সাড়ে ৪ বছরে বিভিন্ন সময়ে ৪৭৯ দিন এভারকেয়ার হাসপাতালে ছিলেন। আমরা তাকে ২১ আগস্ট রিলিজ করে বাসায় নিয়ে এসেছিলাম, বুধবার আবার ওনাকে ভর্তি করতে হয়েছে।
দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে এই চিকিৎসক বলেন, একজনকে বাইরে নিতে হলে শারীরিক সুস্থতা প্রয়োজন। প্লেনে উঠতে হলে নেগেটিভ প্রেশার সহ্য করার মতো সুস্থতা থাকতে হয়, ফ্লাই করার জন্য নেগেটিভ প্রেসার আছে সেটা কতটুকু? ল্যান্ড করার সময়ে কতটুকু তিনি সহ্য করতে পারবেন, সেটি গল্পের বিষয় না, সেটি একাডেমিক, প্রফেশনাল ও সায়েন্টিফিক বিষয়।
অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া। ৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ফুসফুস ও কিডনি জটিলতা, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। সর্বশেষ গত ৮ জুলাই গভীর রাতে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় খালেদা জিয়াকে। এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে সাজামুক্ত বিএনপি চেয়ারপারসন এক মাস ১২ দিন পর ২১ আগস্ট বাসায় ফেরেন। তখন থেকে তার চিকিৎসা বাসায় চলছিল।
সময়ের আলো/জেডআই