ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

‘প্রাণ বাঁচাতে টাকা দিয়ে বাংলাদেশে এসেছি’
জনপ্রতি ২০ হাজার টাকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ!
প্রকাশ: বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:৪১ এএম  (ভিজিট : ২৬৪)
কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ২০টি পয়েন্ট দিয়ে কৌশলে অনুপ্রবেশ করছে রোহিঙ্গারা। এ ক্ষেত্রে দালাল চক্র মাথাপিছু ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের এপারে আসতে সহযোগিতা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। 

সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখলে নিতে আরাকান আর্মি দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে। তাদের সঙ্গে এ লড়াইয়ে যুক্ত রয়েছে আরও কিছু বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন। আরাকান আর্মি গত ৬ মাস যুদ্ধ করে রাখাইনের অধিকাংশ অঞ্চল এবং দেশটির সেনা ও বিজিপির ক্যাম্প, চৌকি দখলের পর মংডু শহর দখল নিতে এখন ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। অপরদিকে সরকারি বাহিনীও মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে। এ সংঘাতের জেরে মংডুসহ আশপাশের গ্রামে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের প্রাণহানি ঘটছে এবং প্রাণ বাঁচাতে নতুন করে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নৌকা করে নাফনদ পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে। এসব রোহিঙ্গাকে সহায়তা করছে টেকনাফের স্থানীয় দালাল চক্র।

দালালের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসা রিদুয়ান (২৫) নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, আমরা মন্ডুর বাসিন্দা, সেখানে অনেক নির্যাতন চলছে। খাবার, চিকিৎসাসহ সবকিছুর অভাবে পড়েছি। পরে বাংলাদেশে থাকা আমাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে প্রাণ বাঁচাতে মাথাপিছু ২০ হাজার টাকা দিয়ে আমরা আটজন  বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি। এখন ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আছি। বাংলাদেশে সরকার কী করে সেটা জানি না।

দালাল চক্রগুলো টেকনাফ সীমান্তের ২০টি পয়েন্ট জাদিমোরা, দমদমিয়া, কেরুনতলি, বরইতলি, নাইট্যংপাড়া, জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়াপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, ঘোলারচর, খুরেরমুখ, আলীর ডেইল, মহেষখালীয়াপাড়া, লম্বরী, তুলাতলি, রাজারছড়া, বাহারছড়া উপকূল দিয়ে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে। সীমান্তের দায়িত্বরত বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে অনুপ্রবেশের পর ওইসব রোহিঙ্গার অনেকেই উখিয়া ও টেকনাফ ক্যাম্পে পরিচিত আত্মীয়স্বজনের আশ্রয়স্থলসহ টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন ভাড়া বাসায় আশ্রয় নিচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবারও মিয়ানমার সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়। এতে আতঙ্কে রয়েছে এপারে সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাসিন্দারা। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাতায়াতও অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। 

উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের চোখ ফাঁকি দিয়ে এরই মধ্যে অনেক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার জন্য রাখাইন রাজ্যের বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা জড়ো হয়েছে। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে সহযোগিতা করছে স্থানীয় দালাল চক্র। এসব রোহিঙ্গা এখন স্থানীয় সাধারণ মানুষের জন্য বোঝা।

টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা কাজ করছেন এবং অনেক রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঠেকিয়েছেন তারা। তবে টেকনাফ উপজেলায় অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের যারা বাসা ভাড়া দিয়েছে বা দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close