ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

শতকোটি টাকার সাম্রাজ্য
পটিয়ার ত্রাস নবাব ও মহব্বত এখনও অধরা
প্রকাশ: বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:০৬ এএম  (ভিজিট : ৪৮৪)
চট্টগ্রামের পটিয়ায় দীর্ঘ  প্রায় ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার করে শতকোটির টাকার মালিক বনেযাওয়া নবাব মহব্বত ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) সংসদীয় আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে  মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সামশুল হক চৌধুরী। তার দুই ভাইÑমুজিবুল হক চৌধুরী নবাব ও ফজলুল হক চৌধুরী মহব্বত। নবাব পেশায় দর্জি ও মহব্বত  কৃষক হলেও ভাই সামশুল হক চৌধুরী সংসদ সদস্য হওয়ার পর পাল্টে যায় তাদের ভাগ্য। দুই ভাই মিলে পটিয়ায় গড়ে তোলেন অপরাধের সাম্রাজ্য। ভাই টানা তিনবার সংসদ সদস্য ও হুইপ থাকাকালীন তাদের অপরাধের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকে।

উপজেলায় গরু চোর চক্রের সঙ্গে সখ্য করে জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের নাইখাইন এলাকায় অসহায় মানুষের জায়গা দখল করে একটি বিশাল ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলেন তারা। এই ডেইরি ফার্মে চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে গরু চোরেরা গরু চুরি করে এনে বিক্রি করত বলে বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা যায়,  নবাব দর্জি থেকে বনে যান উপজেলা যুবলীগের সদস্য। গত ১৬ বছরে চট্টগ্রাম শহরে কিনে নেন কয়েকটি ফ্লাট, অনেক  জমি ও ব্যবসায়িক স্পেস। সরকারি সব টেন্ডার ভাগিয়ে নিয়ে কমিশনে অন্যদের দিয়ে করিয়ে নেন কাজ। তদবির বাণিজ্য, থানা কন্ট্রোল, মাটি বহনকারী গাড়িপ্রতি ২ থেকে ৩ হাজার  টাকা চাঁদা, বালু মহাল দখল, চাঁদাবাজি, জায়গা দখল, মাদক, অস্ত্রের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করত তারা। তাদের কথার বাইরে গেলে মামলা থেকে রেহায় পেত না কেউ।এ ছাড়াও এই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে শতাধিক জায়গা জোরপূর্বক নিজেদের নামে লিখে নেওয়ার অভিযোগ আছে। উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসে মহব্বত চৌধুরী ১০০টি দলিল তৈরি করে বলেও সূত্রে জানা যায়। তা ছাড়াও আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিত তারা।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন হামলার শিকার  ভুক্তভোগীর ভাই সামশুল হক চৌধুরীকে ১ নং আসামি করে আদালতে মামলা করায় ধলঘাট ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. মিজানুর রহমানকে চুরি মামলায় ফাঁসিয়ে জেলে পাঠানো হয়। এই ঘটনার  নেপথ্যেও ছিল সাবেক হুইপের ভাই মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব।

স্থানীয়রা জানান, হুইপের সাইনবোর্ড বিক্রি করে তারা বনে যান বিলাসবহুল গাড়ি, বাড়ির মালিক। নবাব মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হতে না পারলেও বিসিএস কর্মকর্তাদের সঙ্গে করতেন দুর্ব্যবহার।  দুই ভাই মিথ্যা মামলা দিয়ে সাধারণ মানুষকে  হয়রানি ও অত্যাচার করে এলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কোনো সময় । 

শোভনদণ্ডী গ্রামের মাওলানা রফিক জানান, তাদের জায়গা দখলে নিতে  মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করেছিলেন তারা। আমরা হুইপ সামশুল ও তার ভাইদের অত্যাচার অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলাম।
হিলচিয়া গ্রামের মোহাম্মদ ইদ্রিছ জানান, নবাব ও মহব্বত মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের ফাঁসিয়ে দেন। এই শোষকদের বিরুদ্ধে এখনও  কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কোনো মামলাও তাদের বিরুদ্ধে হয়নি।

উপজেলার সিনিয়র এক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, তারা দীর্ঘ ১৬ বছর মানুষের ওপর অত্যাচার, নিপীড়ন চালিয়ে শতকোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন। বিএনপি নেতাদের হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করেছেন। ছাত্রদের আন্দোলনে হামলায় তাদের সম্পৃক্ততা থাকলেও  তাদের বিরুদ্ধে  এখনও কোনো মামলা  হয়নি। এদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close