ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

বাজারে নতুন পাট, দামে স্বস্তি চাষির
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:৩৮ এএম  (ভিজিট : ৩৯০)
উত্তরের জেলা গাইবান্ধার হাট-বাজারে উঠেছে নতুন পাট। বন্যায় বেশকিছু জমির পাটের আবাদ নষ্ট হলেও, চলতি মৌসুমে পাটের ফলন হয়েছে ভালো। নিকট অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় এবার বাজারে পাটের ভালো দাম পাচ্ছেন বলে দাবি করছেন চাষিরা। পুকুর-ডোবায় পাট জাগ দেওয়া, ধোয়া ও শুকানোর কাজ সেরে উৎপাদিত সোনালি আঁশ বিক্রির জন্য হাট-বাজারে নিতে এখন ব্যস্ত পাটচাষিরা। পাট বেচাকেনার জন্য গাইবান্ধার কামারজানি ও ফুলছড়ি হাট সুপরিচিত। এসব হাটে মৌসুমের শুরু থেকেই মানভেদে পাটের সর্বোচ্চ দর ছিল প্রতি মণ ২ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। মৌসুমের শেষের দিকে বর্তমানে হাটে পাটের আমদানি কমতে শুরু করলেও দাম এখনও স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে দাম ভালো পাওয়ায় এবার স্বস্তিতে রয়েছেন এ অঞ্চলের পাটচাষিরা। ফলে পাট কেনাবেচার ধুম পড়েছে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে।

গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে চাষ হয়েছে ১৩ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে বন্যায় ১ হাজার ৪০৩ হেক্টর জমির আবাদ নষ্ট হওয়ায় ১২ হাজার ৩৮৭ হেক্টর জমি থেকে ফলন পাওয়া গেছে। 

এবার কৃষি বিভাগ জেলায় ৫২ হাজার ৯১০ টন পাটের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মৌসুম শুরু করলেও, উৎপাদন হয় ৩৫ হাজার ৯১০ টন। একদিকে চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়া, অন্যদিকে বন্যায় আবাদ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী মোট ৬ হাজার ১১৩ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ না হওয়ায় প্রায় ১৭ হাজার ৪৮৩ টন পাটের উৎপাদন ঘাটতি হয় বলে জানায় সংস্থাটি। তবে চাষিরা বলছেন, এবার পাটচাষে অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। সময়মতো বৃষ্টির ফলে পুকুর-ডোবায় পর্যাপ্ত পানি থাকায় পাট জাগ দিতে কোনো সমস্যা হয়নি জেলার কৃষকদের। এছাড়া সরকার পাটজাত পণ্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করাসহ পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানি হিসেবে পাটকাঠির ব্যবহার ও মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জেলার কৃষকরা আবারও পাটচাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এদিকে পাটের হাটে ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, গত বছরও পাটের ভালো দাম পেয়েছেন চাষিরা। এই দাম মৌসুমের শেষের দিকে আরও বেশি ছিল। তবে গত বছরের চেয়ে এ বছর মৌসুমের শুরুতে প্রতি মণ পাটের দাম গড়ে ২০০ টাকা বেশি। ফলে তাদের ধারণা, এবার শেষ পর্যন্ত আশানুরূপ পাটের দাম পাবেন তারা।

ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের চর রতনপুর গ্রামের কৃষক দেলবার হোসেন (৩২) বলেন, এবার তিনি ছয় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এ থেকে ফলন পেয়েছেন ৪৮ মণ। ২ হাজার ২০০ টাকা দরে প্রতি মণ পাট বিক্রি করে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৫ হাজার ৬০০ টাকা। 

ফুলছড়ি হাটের পাট ব্যবসায়ী গজারিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা কাজল শেখ বলেন, এ বছর পাটের দাম পেয়ে কৃষক অনেক আশাবাদী হয়েছেন। অনেক চাষি আফসোস করছেন তারা কেন বেশি বেশি পাট চাষ করেননি। আমরা মৌসুমের শুরু থেকেই মানভেদে প্রতি মণ ২ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা দরে পাট কিনছি। পরে গিয়ে যদি দাম পড়ে যায় তাহলে আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। তিনি কৃষক ও ব্যবসায়ীদের বাঁচাতে পাটের প্রকৃত দাম ধরে রাখতে সরকারের কাছে আবেদন জানান।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর গাইবান্ধার উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম জানান, চলতি ২০২৪-২৫ খরিপ-১ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলার ৬ হাজার ৬০০ পাটচাষিকে উন্নতমানের পাট বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এবার সময়মতো বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট জাগ দেওয়া নিয়ে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, পাটের নানাবিধ ব্যবহার বৃদ্ধি ও ভালো দাম পাওয়ায় দিন দিন জেলায় পাটের আবাদ বাড়তে শুরু করেছে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close