প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:৩০ এএম (ভিজিট : ৪৩৪)
নওগাঁর পত্নীতলায় অবৈধ ক্লিনিক ডায়াগনোস্টিক এবং ভুল চিকিৎসার সংবাদ প্রকাশের জের ধরে দুই সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ক্লিনিক ডায়াগনোস্টিকের মালিক, চিকিৎসক ও তাদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে নির্যাতন করে সাংবাদিকতা না করার প্রতিশ্রুতিও লিখিয়ে নিয়েছে।
এ ছাড়া জোর করে গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার দুই সাংবাদিক হলেন- দৈনিক জয়পুরহাট বার্তার প্রতিনিধি মাহমুদুন নবী ও দৈনিক মানবকণ্ঠের প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম। মাহমুদুন নবী বর্তমানে বগুড়া শহিদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিউল ইসলাম প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন। এর আগে শনিবার রাতে তাদের তুলে নিয়ে পত্নীতলা সিটি ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তারা।
ঘটনার শিকার মাহমুদুন নবী জানান, শনিবার বিকালে তিনি নজিপুর বাজারে সিটি ক্লিনিকের সামনে একটি স্টলে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় সিটি ক্লিনিকের চিকিৎসক ও মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার দেওয়ান সবুর হোসেন তাকে জোর করে ক্লিনিকের ভেতরে ধরে নিয়ে যায় এবং অতর্কিত মারধর শুরু করে। ঘরে আটকে রেখে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে কয়েক দফায় মারধর করা হয় তাকে। এক পর্যায়ে মেরে ফেলার হুমকির মুখে সাংবাদিকতা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাহমুদুন নবীর কাছ থেকে একটি সরকারি রাজস্ব স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয় তারা। এ ছাড়া ফেসবুকে লাইভে সাংবাদিকতা না করার ঘোষণা এবং গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
এদিকে একই দিন রাত ১০টার দিকে রবিউল ইসলামকে বাড়ির সামনে থেকে মোটরসাইকেলে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় সিটি ক্লিনিকে। সেখানে একটি ঘরে আটক করে নির্যাতন করা হয়। রবিউল জানান, নির্যাতনের পর জোর করে সরকারি রাজস্ব স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করে ক্লিনিক মালিকদের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা।
এ ঘটনায় চিকিৎসক ও ক্লিনিক ডায়াগনোস্টিক মালিক পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছেন। সিটি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হারুনুর রশিদ জানান, চিকিৎসকদের সঙ্গে সাংবাদিকদের দ্বন্দ্ব হয়েছে। এ ঘটনায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কেউ জড়িত নয় দাবি করেন তিনি। চিকিৎসক দেওয়ান সবুর হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, ক্লিনিক ডায়াগনোস্টিক মালিক পক্ষের লোকজন সাংবাদিকদের মারধর করেছে।
এ বিষয়ে পত্নীতলা থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সাংবাদিক মাহমুদুন নবী ও রবিউল ইসলামকে উদ্ধার করে আনা হয়। তবে তারা এখনও কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সময়ের আলো/জিকে