ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

লক্ষ্মীপুরে দু’খালের তীব্র ভাঙন, বিলীন ৪০ পরিবার
‘রাক্ষসী খালের পেটে চলে গেছে সব কিছু, আমরা এখন বড়ই নি:স্ব’
প্রকাশ: সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:৫৮ পিএম  (ভিজিট : ১৭০)
লক্ষ্মীপুরে ওয়াপদা ও রহমত খালী খালের তীব্র ভাঙ্গনে মুখে ৪০টি পরিবারের বসতভিটে খালের গর্ভে তলিয়ে গেছে। ভিটেমাটি হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন ঘরবাড়ি হারা এসব মানুষ। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়ছেন তারা। এখন খালের তীরেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে ভাঙ্গন কবলিত এসব মানুষদের। নতুন করে ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। অবশ্যই পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী প্রতিরক্ষা কাজ শুরু হয়েছে। স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরে ওয়াপদা ও রহমত খালী খালের তীব্র স্রোতে ভাঙছে সদর উপজেলার টুমচর, দক্ষিণ কালিচর ও পিয়ারাপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। গত ১৫ দিনে ভাঙনের মুখে বিলীন হয়েছে এসব গ্রামের ফসলি জমি, বসতভিটেসহ গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক পরিবার। এরই মধ্যে বসতভিটে হারিয়েছেন অন্তত ৪০ পরিবার। জায়গা জমি ও বসতভিটে হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি নামতে শুরু করার পর রহমতখালী ও ওয়াপদা খালে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এতে গত ১৫ দিনে ভাঙ্গনের মুখে পড়ে অন্তত ৪০টি পরিবারের বসতঘর তলিয়ে যায়। ভেসে যায় জলাশয়ের মাছ। খালের গর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক ফসলি জমি। জায়গাজমি হারিয়ে এখন নিঃস্ব ভাঙ্গন কবলিত এসব মানুষ। অচিরেই তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ না করা হলে হুমকির মুখে পড়বে বিস্তীর্ণ এলাকা।

সদর উপজেলার পিয়ারাপুর গ্রামে বাসিন্দা রাজন বলেন, ভাঙনের কবলে পড়ে বাড়ি-ঘর হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। কোনো রকম টিনের বেঁড়া দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে খালের পাড়েই বসবাস করছি। আমাদের যাওয়ার মত কোনো জায়গা নেই।

কোথায় থাকবো বা কোথায় যাবো, এই ভেবেই এখন নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। এছাড়া একই অবস্থা এখানকার ১৭টি পরিবারের। এই অবস্থায় সরকারি সহযোগীতার দাবি জানান এই ভুক্তভোগী।

একই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত আব্দুল মালেক, দুলাল, আব্দুল্লাহ আল নোমান ও আলেয়া বেগম বলেন, কয়েকদিন আগেও আমাদের এখানে সাজানো গুছানো সংসার ছিল। বাড়িঘর ছিল, রান্না ঘর ছিল, উঠান ছিল। সবাই মিলে মিশে বসবাস করেছি। বছরের পর বছর আমরা এখানে থেকেছি। আজ সব কিছু এই রাক্ষসী খালের পেটে চলে গেছে। আমরা এখন বড়ই নি:স্ব। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাই পর্যন্ত নেই।

এদিকে ভাঙ্গন থেকে রক্ষায় তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবিতে গতকাল (রোববার) জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ক্ষতিগ্রস্তরা। পরে মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, খালের পানির তীব্র স্রোতে ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। দুই একটি স্থানে অস্থায়ী তীর প্রতিরক্ষা কাজ শুরু করা হয়েছে। স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুতই নির্মাণ করা হবে স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  খালের তীব্র ভাঙন-বসতভিটে বিলীন   লক্ষ্মীপুর   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close