প্রকাশ: সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:০১ পিএম (ভিজিট : ২৮৮)
নোয়াখালীর হাতিয়ায় নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অবৈধভাবে জমি দখল ও মসজিদের পুকুর ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ফসলি জমি ও তার ফসল। অন্যদিকে সামাজিক পরিবেশ বিপন্ন হওয়ায় ক্ষোভ বিরাজ করছে স্থানীদের মাঝে।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড কিল্লা বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মসজিদ সংলগ্ন জমিতে বিশাল আয়তনের বাঁশের চালির ঘেরা দিয়ে বালু আটকিয়ে ঢিবি করে রাখা হয়েছে। নদীর কূল থেকে বালু ওঠানোর কাজে ব্যবহৃত লম্বা পাইপের সংযোগ জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। আশপাশে অবস্থিত বাড়িঘরে গৃহস্থ নর-নারীদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বালুর কারণে ব্যাহত হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানায়, চরকিং ইউনিয়নের কিল্লা বাজার থেকে জনতা বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ার কথা। কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম আলী কর্পোরেশন। তারা কাজটি শুরু করার লক্ষ্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে প্রায় ১৮০ শতক কৃষি জমি এবং পাশের মসজিদের পুকুর বালি ফেলে জোরপূর্বক ভরাট করে। এতে জমির মালিক বাধা দিলে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হেনস্থা করা হয়।
জমির মালিক আবুল হোসেন বলেন, এমপি মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে চেয়ারম্যান নাঈম মিয়া আমার জমিতে বালু ফেলা শুরু করলে আমি বাধা দিয়, তারা আমাকে মারধর করে, আমি যদি আর এখানে আসি আমাকে বালুর নিছে ঢুকিয়ে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। আমি তাদের ক্ষমতার কাছে অসহায় ছিলাম, আপনাদের মাধ্যমে আমি এর বিচার চাই।
মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আফের উদ্দিন বলেন, আমাদের পুকুরটি জোর পূর্বক বালু দিয়ে ভরাট করে ফেলেছে। অজু কালামের জন্য রাস্তার ওপারে গিয়ে অন্য পুকুরে যেতে হচ্ছে। বাতাসের সাথে জানালা দিয়ে মসজিদের ভিতরে বালু ঢুকে পড়ায় মুসুল্লিদের অসুবিধার সৃষ্টি করছে।
সাবেক ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন বলেন, মূলত সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলীর নির্দেশে এলাকার চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বার সিন্ডিকেটে কিছু মাস্তান রয়েছে তারা জনগণকে বাকরুদ্ধ করে নদী থেকে বালু উত্তোলনের কাজটা করছে। বিষয়টি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে প্রতিকার করা উচিত এবং যে লোকটার জমিতে বালু রাখা হয়েছে অতি সত্বর সরিয়ে উন্মুক্ত করা উচিত যাতে সে জমিতে চাষাবাদ করতে পারে।
এ বিষয়ে চরকিং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাঈম উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, কিল্লা বাজার রাস্তার কাজটি পেয়েছে এম আলী কর্পোরেশন। কাজ শুরু করার আগে তারা বালু রাখার জন্য আবুল হোসেনের জমিটি সিলেক্ট করে। সে লক্ষে মালিকের সাথে আমার উপস্থিতিতে জমির ফসল বাবদ যে টাকা আসবে সেই টাকার দ্বিগুণ পরিশোধ করার সিদ্ধান্ত হয়। পরে তারা জাহাজের মাধ্যমে অন্যত্র থেকে বালু এনে এখানে রাখে। রাস্তার কাজ শুরু হলে বালু নিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি বলেন, নদী থেকে বালু উত্তোলন এবং ফসলি জমি ভরাট করা সম্পূর্ণ বে-আইনি। বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সময়ের আলো/আরআই