রাজশাহীতে আন্দোলন চলাকালে এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে তিন যুবককে পিটিয়েছে ছাত্র-জনতা। পরে তাদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে একজন নদীতে লাফ দিয়ে পালিয়ে গেলেও তাকে ধরে নিয়ে আসা হয়। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।
ধর্ষণে অভিযুক্তরা হলেন- কটা, সানি ও মাসুদ। তারা নগরীর পঞ্চবটি এলাকার বাসিন্দা। তবে ছাত্ররা দাবি করেছেন, অভিযুক্তরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল। তারা ৫ আগস্ট সংঘর্ষের সময় এক নারী শিক্ষার্থীকে আশ্রয় দিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
ছাত্ররা জানিয়েছে, শনিবার বিকেলে রাজশাহী রেল স্টেশন এলাকা থেকে ধরা পড়ে সানি। এসময় গত ৫ আগস্ট এক ছাত্রীকে ধর্ষণের বিষয়টি সামনে আসে। এতে সানি স্বীকার করে বলে আরও ছয় থেকে সাতজনের নাম বলেন। তাদের মধ্যে রয়েছে কটা ও মাসুদও। এসময় সানিকে ধরে কটার সন্ধানে পঞ্চবটির নদীর ধারে আসে শিক্ষার্থীরা। কটা বিষয়টি টের পেয়ে পদ্মা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে চরে গিয়ে উঠে। পরে তাকে ধরে নিয়ে আলুপট্টির পাড়ে নিয়ে আসা হয়। এসময় ছাত্র-জনতার হাতে গণধোলাইয়ের শিকার হয় কটা।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কটা ভ্যান চালায় আর সানি নগরীতে একটি প্রেসে কাজ করেন। তাদের রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানায়, কটাকে বিকেলে পদ্মা নদীর চর থেকে ধরে নিয়ে আসা হয়। পাড়ে তোলা হলে কা গণধোলাইয়ের শিকার হয়। পরে তাকেসহ বাকিদের আহত অবস্থায় পুলিশ হেড কোয়ার্টারে নিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যেতে বলা হয়। পরে তাদের বোয়ালিয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা।
ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আমরা একটা মিটিংয়ে ছিলাম। হঠাৎ খবর এলো একজন ধর্ষক ধরা পড়েছে। এতদিন আমাদের কানে আসছিল গত ৫ আগস্ট এক ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মানের ভয়ে কোন মামলা হয়নি। আটক হওয়া সানি ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আরও ছয় থেকে সাতজনের নামও বলেছে। পরবর্তীতে তার তথ্যে ভিত্তিতে নদীপাড়ে কটাকে ধরতে যাওয়া হয়। এসময় কটা নদীতে ঝাঁপিয়ে সাঁতার দিয়ে মাঝ নদীর চরে চলে যায়। পরে তাকে ধরে নিয়ে আসা হলে একটা গণধোলাইয়ের মুখে পড়তে হয় তাকে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ পারভেজকে বেশ কয়েকবার কল দিলে তাকে পাওয়া যায়নি। থানাতেও তিনি ছিলেন না। তবে কর্মরত অফিসার জানান, তিনজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তাদের চিকিৎসার জন্য রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় কেউ মামলা বা অভিযোগ দেয়নি। যারা অভিযুক্তদের নিয়ে এসেছেন তাদের বলা হয়েছে যে শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়েছে তার পরিবারকে মামলা করতে। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত মামলা করার জন্য আসেননি। থানায় কোন অভিযোগও করা হয়নি। অভিযোগ বা মামলা করলে আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো।
সময়ের আলো/এএ/