ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

তদন্ত দাবি যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের
পশ্চিম তীরে মার্কিন তরুণীকে মাথায় গুলি করে হত্যা
প্রকাশ: রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৭:২০ এএম  (ভিজিট : ২২৬)
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে তুর্কি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ইহুদি বসতি বাড়ানোর প্রতিবাদে শুক্রবার পশ্চিম তীরের নাবলুসের কাছে বেইতা শহরে এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন আয়েশা নূর এজগি এইগি নামের ওই তরুণী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, ইসরাইলি বাহিনীর গুলি তার মাথায় লাগলে তিনি মারা যান। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবারের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া একজন বিবিসিকে জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনপন্থি ইন্টারন্যাশনাল সলিডারিটি মুভমেন্টের হয়ে ওইদিনই প্রথমবারের মতো বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন এইগি। তুর্কি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তার জন্ম তুরস্কের আনতালিয়ায়। বিবিসি জানিয়েছে, শুক্রবার তুরস্ক-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বৈত নাগরিক এইগি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরপরই তাকে নাবলুসের রাফাদিয়া হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল। কিছুক্ষণ পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

ওই হাসপাতালের প্রধান ডা. ফুয়াদ নাফা নিশ্চিত করেছেন, এইগির মাথায় গুলি লেগেছিল। ঘটনার পর ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ওইদিন ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনরত ইসরাইলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে এক বিক্ষোভকারী পাথর ছুড়ছিলেন। পরে ওই বিক্ষোভকারীর উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের জবাবে ইসরাইলি বাহিনী গুলি ছোড়ে। সেখানে কোনো বিদেশি নাগরিক মারা গেছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে আইডিএফ বলেছে, ঘটনার বিশদ বিবরণ এবং কোন পরিস্থিতিতে ওই তরুণী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন, তাও পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

তবে এইগির সঙ্গে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ইসরাইলি বিক্ষোভকারী জনাথন পোলক দাবি করেছেন, তিনি পরপর দুটি গুলির শব্দ শুনেছেন। এইগি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তিনিই প্রথমে তার কাছে ছুটে গিয়েছিলেন; চেষ্টা করেছিলেন হাত দিয়ে চেপে ধরে রক্তপাত ঠেকানোর। নিজের হাতে লেগে থাকা রক্ত দেখিয়ে পোলক বলেন, ‘আমি দেখলাম সে (ইয়েগি) একটি গাছের পাশে মাটিতে পড়ে আছে। তার মাথা রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। আমি পরীক্ষা করে দেখলাম তার নাড়ির গতি খুবই ধীর। এরপর আমরা অ্যাম্বুলেন্স ডাকি। সেখান থেকে তাকে আমরা প্রথমে গ্রামের একটি চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাই। সেখান থেকে পরে তাকে চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে যান, তারা (বাঁচানোর) চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সম্ভব হয়নি।’

আইডিএফের বিবৃতির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পোলক। বিবিসির ‘নিউজআইওয়ার’কে তিনি বলেন, সেখানে সংঘর্ষ হয়েছিল ঠিকই; কিন্তু তা ইসরাইলি সেনাদের জন্য হুমকি ছিল না বলে মনে করেন তিনি। তার দাবি, আলাদা একটি স্থানে এইগিকে আলাদাভাবে গুলি করা হয় এবং ওই জায়গায় সেনাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

মর্মান্তিক এই ঘটনায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দুঃখ প্রকাশ করলেও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোগান ইসরাইলের এ কর্মকাণ্ডকে ‘বর্বর’ বলে উল্লেখ করেছেন। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, নাবলুসে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীই এইগিকে গুলি করে হত্যা করেছে। অন্যদিকে হোয়াইট হাউস মিত্র ইসরাইলকে দোষারোপ না করলেও ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন জরুরি ভিত্তিতে ওই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করছে।

এদিকে শনিবার বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এ ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক বলেছেন, ‘ঘটনার পূর্ণ তদন্ত এবং দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।’


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close