ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

অভিযোগ ডিলার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে
সরকার নির্ধারিত দামে মিলছে না সার
প্রকাশ: রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:১১ এএম আপডেট: ০৮.০৯.২০২৪ ২:৩৪ এএম  (ভিজিট : ২১১)
কৃষকদের কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগের তদন্ত করা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খান বলেন, সারের অতিরিক্ত দাম নেওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য আমি কৃষি অফিসের সব কর্মকর্তাদের মাঠে নেমে কাজ করার নির্দেশ দেব। এ ছাড়া সারের বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজার মনিটরিং বাড়ানো হবে। পাশাপাশি সার নিয়ে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে সেগুলোর তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

অবশ্য অতিরিক্ত দামে সার বিক্রির দায় নিতে নারাজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার। উল্টো প্রশাসনের ওপর দায় চাপিয়েছেন তিনি। তার কথায়, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ে নজরদারির কোনো বালাই নেই।

বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স দানিউল হক অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী মো. দানিউল হক সময়ের আলোকে বলেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দাম নেওয়ার বিষয়ে একটি মহল গুজব রটাচ্ছে। এটি কৃষি বিভাগের সুনাম নষ্ট করার জন্য করা হচ্ছে। সার বিক্রির বিষয়ে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সেগুলো সঠিক নয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মুনজের আলম মানিক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত আগস্ট মাসের বরাদ্দকৃত সারের একটা বড় অংশ বাইরে বিক্রি করে দিয়েছে ডিলার সিন্ডিকেটের কতিপয় সদস্য। মূলত এ কারণেই সারের এই বাড়তি দাম। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি আরও বলেন, যদি সার বাইরে বিক্রি করা না হতো তবে আমাদের কাছে কেন এত অভিযোগ আসছে! এই কাজে শুধু ডিলাররা নয়, কৃষি বিভাগও জড়িত। এমন ঘটনা প্রতি বছরই ঘটছে। তাই দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি আমরা।

জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৪ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে চলছে আমনের ভরা মৌসুম। চারা রোপণের পর অন্তত তিন দফায় ইউরিয়াসহ বিভিন্ন সার প্রয়োগ করতে হয়। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে সার কেনার কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষকদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এতে লোকসানের শঙ্কাও বাড়ছে পাল্লা দিয়ে।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত বস্তাপ্রতি ইউরিয়া ও টিএসপি সার ১ হাজার ৩৫০ টাকা। ডিএপি ১ হাজার ৫০ টাকা এবং এমওপি ১ হাজার টাকা। কিন্তু ডিলার সিন্ডিকেটের কারণে সার কিনতে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। বস্তাপ্রতি বাড়তি খরচ হচ্ছে ১৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। কৃষকদের অভিযোগ, জমিতে সারের প্রয়োজন থাকায় বাধ্য হয়েই বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে সার। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ার পাশাপাশি লোকসানের শঙ্কায় আছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তাদের।

খুচরা সার বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে নন ইউরিয়া সারের সরবরাহ কম জানিয়ে বেশি দাম নিচ্ছেন ডিলাররা। এ কারণে তাদের বেশি দামে সার কিনতে হচ্ছে। ক্রয়মূল্য বেশি হওয়ায় বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকার নির্ধারিত দামে সার মিলছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, বস্তাপ্রতি অতিরিক্ত ১৫০-৩০০ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে ইউরিয়া, ডিএপি, এমওপি ও টিএসপি সার। কোথাও কোথাও সার সংকটও রয়েছে। কৃষি বিভাগের সহায়তায় ডিলারদের কারসাজির কারণেই বাড়তি এ অর্থ গুনতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ বাড়ায় চলতি আমন মৌসুমে লোকসানের শঙ্কা তাদের। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।



সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close