ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

মোগল আমলের ঐতিহ্যবাহী বজরা শাহী মসজিদ
প্রকাশ: শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:১৬ এএম  (ভিজিট : ১৭০)
মোগল আমলে নির্মিত অন্যতম একটি স্থাপত্য নোয়াখালীর বজরা শাহী মসজিদ। নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার অন্তর্গত বজরা ইউনিয়নে বজরা শাহী মসজিদ অবস্থিত। এটি আঠারোশ শতাব্দীতে নির্মিত। দিল্লির মোগল সম্রাটগণ অবিভক্ত ভারতবর্ষে প্রায় ৩০০ বছর শাসনকালে বিভিন্ন স্থাপত্য নির্মাণ করে গেছেন। বজরা শাহী মসজিদ এসবের অন্যতম একটি নিদর্শন। মোগল সম্রাট মুহাম্মদ শাহের শাসনামলে  ১১৫৪ সাল, ১১৩৯ বাংলা মোতাবেক ১৭৪১ সালে স্থানীয় জমিদার আমান উল্লাহর তত্ত্বাবধানে এটি নির্মাণ করা হয়। এটি দিল্লির বিখ্যাত জামে মসজিদের আদলে নির্মিত হয়েছে।

জমিদার আমান উল্লাহ তার বাড়ির সামনে ৩০ একর জমিতে দিঘি খনন করেন। এই দিঘির পশ্চিম পাশে নির্মিত হয় বজরা শাহী মসজিদ। এই মসজিদের দৈর্ঘ্য ১১৬ ফুট এবং প্রস্থ ৭৪ ফুট। ৩ গম্বুজবিশিষ্ট এই মসজিদের গম্বুজগুলো মার্বেল পাথরে মোড়ানো। ভেতরে রয়েছে নয়নাভিরাম কারুকাজ। এই কারুকাজ যে কাউকে মোহিত করবে। 

মসজিদের ভেতরে মসজিদে নববীর মতো অবতল আকৃতির ৩টি মিহরাব রয়েছে। প্রতিটি মিহরাব কারুকার্যখচিত। মসজিদের চার কোণে রয়েছে চারটি মিনার। যা এর সৌন্দর্যকে বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছে। মসজিদের পূর্বদিকে রয়েছে বিরাট তোরণ। তোরণের দোতলার ওপরে রয়েছে মনোরম উঁচু মিনার। সৌন্দর্য ও অলংকরণের জন্য চীন দেশীয় গ্লাস কেটে মসজিদের গায়ে লাগানো হয়। মসজিদের প্রবেশপথে ধনুক আকৃতির দরজা রয়েছে। তা ছাড়া এ প্রবেশপথে কয়েকটা গম্বুজও রয়েছে।

১৯০৯ সালে এ মসজিদটি একবার মেরামত করা হয়। তারপর ১৯১১ থেকে ১৯২৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে খান বাহাদুর আলী আহমদ ও খান বাহাদুর মুজির উদ্দিন আহমদ মসজিদটি ব্যাপকভাবে মেরামত করেন এবং সিরামিকের মোজাইক দিয়ে সজ্জিত করেন। 

মোগল স্থাপত্য শিল্পের এক অনন্য নিদর্শন বহনকারী বজরা শাহী মসজিদ একনজর দেখলে যে কারও চোখ জুড়িয়ে যাবে। নোয়াখালীসহ সমগ্র বাংলাদেশে ইসলাম ধর্ম প্রচার-প্রসারে এর ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে। মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহের বিশেষ অনুরোধে পবিত্র মক্কা শরিফের বাসিন্দা বিশিষ্ট আলেম হজরত মাওলানা শাহ আবু সিদ্দিকী (রহ.) এ ঐতিহাসিক মসজিদের প্রথম ইমাম ছিলেন। বর্তমানে এই ইমামেরই সপ্তম পুরুষ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।  

প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এ মসজিদে এসে দান-অনুদান করে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন। অনেকে এসে এখানে নামাজ আদায় করেন। তা ছাড়া দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পর্যটক এখানে আসেন এই ঐতিহাসিক মসজিদটি দেখার জন্য। মসজিদের ইমাম কিংবা খাদেম আগত দর্শনার্থীদের মসজিদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করেন। এই মসজিদটি বাংলাদেশের একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close