ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নদীতে বর্জ্য ফেলায় দূষিত হচ্ছে পানি
কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় যেন ময়লার ভাগাড়
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:৫৮ এএম  (ভিজিট : ১৬৬)
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। উপজেলা শহরের বাসাবাড়ি ও বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নদীর পাড়ে। শীতলক্ষ্যা নদীতেও ফেলা হচ্ছে ময়লা। এতে ময়লা-আবর্জনা ও পলিথিনে ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে নদীর পানি ও আশপাশের পরিবেশ। এ নিয়ে স্থানীয় লোকজন ও পরিবেশবাদীরা অভিযোগ করলেও মিলছে না প্রতিকার। সমস্যা সমাধানে প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একেএম লুৎফর রহমান বলেন, কাপাসিয়া বাজারের ইজারাদার বাজার ও আশপাশের বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা নদীর তীরে না ফেলে অন্যত্র কোনো জায়গায় ফেলতে পারেন স্থানীয়রা। এখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম লুৎফর রহমান।

বাজারের ময়লা-আবর্জনা নদীর তীরে ফেলার বিষয়ে বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সচিব মো. সাইফুল ইসলাম শাহীন বলেন, বাজারের ময়লা-আবর্জনা রাখার মতো নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়ে নদীর পাড়েই এসব ফেলা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হবে যাতে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য অন্যত্র নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা করা হয়। প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে বাজার ব্যবসায়ীরা আশাবাদী।

বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সচিব মো. সাইফুল ইসলাম শাহীন আরও বলেন, বৃষ্টির পানি ময়লা-আবর্জনার সঙ্গে মিশে দূষিত হয়ে শীতলক্ষ্যা নদীতে গিয়ে পড়ছে। ফলে নদীর পানি দূষিত হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন থেকেই দেখা গেছে, নদীর তীরে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করে এর সুবিধা নেয় একটি প্রভাবশালী মহল। তারা ভরাট হওয়া জায়গায় অবৈধভাবে দোকানপাট তৈরি করে মোটা অঙ্কের টাকায় ঘরগুলো হস্তান্তর করেন।

সরেজমিন আলাপকালে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কাপাসিয়া সদর বাজার ও আশপাশের বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনাসহ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য যাচ্ছে নদীতে। বাজার সংলগ্ন শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় বানিয়ে ফেলা হয়েছে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়। বাজারের সব ময়লা-আবর্জনা নদীর পাড়ে ফেলা হয়। বাজারের কসাইখানার বর্জ্য, পশুর উচ্ছিষ্ট ও মুরগির নাড়িভুঁড়ি, দইয়ের টালি, আখের ছোবরা, পচাগলা ফলমূলসহ বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য নদীর পাড়ে এবং নদীতে সরাসরি ফেলা হচ্ছে। এমনকি মাঝেমধ্যে ময়লার ভ্যান বিভিন্ন এলাকা থেকে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা এনে স্তূপ করে রেখে যাচ্ছে নদীর পাড়ে। নদীর পাড়ে জমা হয়েছে পলিথিন ও ময়লার বিশাল স্তূপ। এসব ময়লা-আবর্জনা ও পলিথিন গিয়ে পড়ছে নদীর পানিতে। পাশেই রয়েছে খেয়াঘাট। খেয়া পার হয়ে বাজারে আসা কয়েকজন জানান, বাজার করতে এলে নাকে রুমাল ধরে আসতে হয়। দুর্গন্ধে কাঁচাবাজার এলাকায় যাওয়াই যায় না। এসব ময়লা-আবর্জনার কারণে ছড়িয়ে পড়ছে রোগ-জীবাণু।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বাজারের ব্যবসায়ী মো. হুমায়ুন কবির লিটন, মো. হাবিবুর রহমান ও মো. জামাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, নদীর পাড়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলে প্রথমে ভরাট করা হয়। তারপর দেখা যায়, এলাকার বা বাজারের কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে সেই জায়গা দখলে নিয়ে দোকানপাট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। তারা বলেন, আগে আমরা এই শীতলক্ষ্যা নদীর পরিষ্কার পানিতে গোসল করতাম। বর্তমানে শ্রীপুর ও ভালুকা এলাকার বিভিন্ন শিল্প কারখানার কেমিক্যাল মিশ্রিত দূষিত পানি ও কাপাসিয়া বাজারের ময়লা-আবর্জনা শীতলক্ষ্যা নদীর পানির সঙ্গে মিশে কালো বর্ণ ধারণ করেছে। নদীর পানিও দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে গেছে। নদীতে নামলেই শরীর চুলকায় এবং শরীরে বিভিন্ন অংশে খোস-পাঁচড়া বের হয়।



সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close