ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

হাতিয়ায় যত্রতত্র অকটেন-পেট্রোল বিক্রি
বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে লোকজন
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:৫৪ এএম  (ভিজিট : ১৯৮)
হাতিয়া উপজেলায় সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অবাধে যত্রতত্র বিক্রি হচ্ছে অকটেন-পেট্রোল ও ডিজেল। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার বিভিন্ন মুদি দোকান, হার্ডওয়্যার দোকান, ক্রোকারিজ দোকান, সার দোকান এবং চায়ের দোকান থেকে শুরু করে সড়কের প্রতিটি মোড়ে বিক্রি হচ্ছে এসব জ্বালানি তেল। তাদের অধিকাংশের নেই কোনো লাইসেন্স এবং অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। অথচ নিয়ম অনুযায়ী দাহ্য পদার্থ বিপণন ও বাজারজাত করতে হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়ীকে বিস্ফোরক অধিদফতরের লাইসেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র নিতে হয়।

সরেজমিন দেখা যায়, হাতিয়া উপজেলার ছোট-বড় বিভিন্ন হাটবাজারে প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকানে বিক্রি হচ্ছে এসব দাহ্য পদার্থ। বিভিন্ন দোকানে দুই লিটার, এক লিটার অথবা আধালিটার ওজনের প্লাস্টিকের বোতলে অকটেন-পেট্রোল ভরে পসরা সাজিয়ে রাখা হয়েছে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই বোতলভর্তি এই অকটেন-পেট্রোল কিনতে পারেন। এতে ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

বিস্ফোরক অধিদফতরের মাধ্যমে জানা যায়, হাতিয়ায় প্রায় ৩৫টির মতো দাহ্য পদার্থ বিপণন ও বাজারজাতকারী লাইসেন্সকৃত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। নবায়ন না করার কারণে তার মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে ২৮টির মতো লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। জ্বালানি তেল বিক্রির জন্য কমপক্ষে পাকা মেঝেসহ আধাপাকা ঘর, ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সক্ষমতা সংক্রান্ত লাইসেন্সসহ অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার এবং মজবুত ও ঝুঁকিমুক্ত সংরক্ষণাগার থাকার সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সেসব নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হাতিয়ার ছোট-বড় বাজারের প্রায় পাঁচ শতাধিক দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে দাহ্য পদার্থ। এভাবে জ্বালানি তেল বিক্রিতে প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় থাকতে হয় সাধারণ মানুষদের। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

মেসার্স করীম ব্রাদার্সের পরিচালক মো. মুজাহিদুল করীম বলেন, হাতিয়ায় অনেকগুলো অবৈধ দোকান গড়ে উঠেছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ১০০-১২০ লিটার জ্বালানি তেল বিক্রি করতাম এখন তার অর্ধেকে নেমে এসেছে। যার কারণে অনেক টাকা দোকান ভাড়া দিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হচ্ছে। অনেক লাইসেন্সধারী দোকানদার এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছে।

হাতিয়ার বিভিন্ন বাজারের একাধিক জ্বালানি তেল বিক্রেতা দায় স্বীকার করে বলেন, আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সারাদিনে অল্প কয়েক লিটার তেল বিক্রি করি। বিস্ফোরক আইন সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। লোকজনের চাহিদা থাকায় এজেন্টদের কাছ থেকে দৈনিক ১৫-২০ লিটার করে এনে বিক্রি করি।
হাতিয়া থানার ওসি জিসান আহমেদ জানান, লাইসেন্স ছাড়া কোনো দোকানে ডিজেল-পেট্রোল, অকটেন বিক্রি করার সুযোগ নেই। উপজেলা প্রশাসন বা এসব দোকান তদারকির দায়িত্বে থাকা সরকারি সংস্থা যদি আমাদের সহযোগিতা চায় আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।

এ বিষয়ে হাতিয়ার ভারপ্রাপ্ত ইউএনও ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিল্টন চাকমা বলেন, খোলাবাজারে অকটেন, ডিজেল-পেট্রোল বিক্রি করা যাবে না। দাহ্য পদার্থ বিক্রির সুনির্দিষ্ট বিধিমালা আছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত লাইসেন্স ছাড়া যত্রতত্র বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। অবৈধভাবে এসব বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিগগিরই এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের বিস্ফোরক পরিদর্শক মো. তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিস্ফোরক অধিদফতরের নিবন্ধন ছাড়া কোনো দোকানে অকটেন, ডিজেল-পেট্রোল বিক্রি করার সুযোগ নেই। যারা অবৈধভাবে দাহ্য পদার্থ বিপণন ও বাজারজাত করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

তিনি আরও বলেন, হাতিয়া একটি বিচ্ছিন্ন উপজেলা হওয়ায় সেখানে আমরা সবসময় যেতে পারি না। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে যত্রতত্র অকটেন-পেট্রোল বিক্রয়কারীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করব।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close