প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:৩৪ এএম (ভিজিট : ২৬৮)
মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচন আগামী ২০২৫ সালে হবে বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে সে দেশের জান্তা সরকার। এবার সেই নির্বাচনের জন্য জনশুমারি ও ভোটার তালিকা হালনাগাদের ঘোষণ দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং এই ঘোষণা দিয়েছেন।
২০১৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়ে সরকার গঠন করেছিল অং সান সুচির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। কিন্তু সেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জেনারেল মিন অং হ্লাইং সেই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ক্ষমতা দখলের পর গঠিত সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রোববার সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জেনারেল হ্লাইং। বৈঠক শেষে টেলিভিশন সম্প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেন, আগামী ১ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত মিয়ানমারজুড়ে চলবে জনশুমারি ও ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ। হ্লাইং বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। নির্বাচন স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য করার জন্য জনসংখ্যা ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ থাকা প্রয়োজন। আমরা নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই কাজটি শেষ করতে পারব বলে প্রত্যাশা করছি।’
মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থান শুরু থেকেই দেশটির জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। ব্যাপক দমন-পীড়ন ও নিরাপত্তা বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ উপেক্ষা করে রাস্তায় নামে মানুষ। হত্যার শিকার হয় কয়েকশত মানুষ। জান্তার ক্ষমতা দখলের দুই মাসের মাথায় ২০২১ সালের এপ্রিলে গিয়ে মিয়ানমারের সামরিক সরকারবিরোধীরা জাতীয় ঐক্য সরকার গঠন করেছে। অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া পার্লামেন্ট সদস্য, জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের নেতা ও আদিবাসী গোষ্ঠী সম্মিলিতভাবে এই সরকার গঠন করেছে। ঐক্য সরকার ঘোষণা দেয়, তাদের লক্ষ্য সামরিক শাসনের অবসান ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। তবে এখনও গণতন্ত্র ফেরেনি। সামনে নির্বাচনের ঘোষণা থাকলেও গণতন্ত্র ফেরার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। এদিকে নতুন করে সক্রিয় হওয়া শুরু করে জান্তাবিরোধী বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীও। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যসহ মিয়ানমারের মোট ভূখণ্ডের এক পঞ্চমাংশ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বিভিন্ন সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হাতে।
গত ১৭ জুন সামরিক বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মিয়ানমারের মান্দালয় শহরে গিয়েছিলেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, ২০২৫ সালে যদি সত্যিই নির্বাচন হয়, তা হলে সেটিকে পশ্চিমা বিশ্ব স্বীকৃতি দেবে; এমন সম্ভাবনা খুব কম। কারণ মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি এখনও কারাবন্দি। তার দল এনএলডিকেও বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জান্তা। তবে মিয়ানমারের বন্ধু রাষ্ট্র চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই গত মাসে বলেছেন; জনশুমারি, ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং নির্বাচনে মিয়ানমারকে প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য লজিস্টিক সমর্থন দেবে বেইজিং।
সময়ের আলো/জেডআই