ধীরগতিতে নামছে লক্ষ্মীপুরে বানের পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

প্রকাশ: সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৯:৪৬ পিএম (ভিজিট : ২৩০)

লক্ষ্মীপুরে ধীরগতিতে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও দুর্গত এলাকায় এর প্রভাব খুব বেশি পড়েনি। সদর উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকায় প্রতিদিন কোথাও এক ইঞ্চি, কোথাও বা দুই ইঞ্চি পানি কমছে। এখনো পানিবন্দী রয়েছেন জেলার অনন্ত ৮ লাখের বেশি মানুষ। এতে করে বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। গত ১৫ দিন ধরে জলবন্দী অবস্থা থাকায় পানিবাহিত রোগবালাই দেখা দিয়েছে দুর্গত এলাকায়। তাছাড়া সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ায় এখন কোমর বা হাঁটু পানি মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বন্যা কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের। আবার কারো কারো ভেলা বা নৌকাই এখন যাতায়াতের সঙ্গী। সদর উপজেলার বন্যা দুর্গত বিভিন্ন এলাকায় এখন দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়। সুপেয় পানি সংকট এবং পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা না চরম বিপাকে পড়েছেন বানভাসিরা।

এদিকে বন্যায় কৃষি, মৎস্য এবং প্রাণী সম্পদ খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর হিসেবে মতে, কৃষিখাতে ২২৭ কোটি, প্রাণী সম্পদ খাতে ৮ কোটি ৬৫ লাখ এবং মৎস্য খাতে ২৪০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে পথে বসায় উপক্রম হয়েছে কৃষক, মৎস্য চাষি ও পশু-পোল্টি খামারিদের। এমন বাস্তবতায় সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

এদিকে স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, একশ্রেণির প্রভাবশালীরা খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি প্রবাহে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় নামতে পারছেনা উজান থেকে নেমে আসা পানি। এতে গত ১৫ দিন থেকে পানিবন্দী হয়ে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ইউনুস মিয়া বলেন, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সরকারি হিসেবে অনুযায়ী ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ জন লোক পানিবন্দী হয়ে আছে। জেলার ৪১৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৩২ হাজার ৫১৯ জন। জেলার প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা এখনো পানির নীচে। তিনি বলেন, পানি ধীরগতিতে নামছে। দিনে এক থেকে তিন ইঞ্চির মতো পানি কমছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান জানান, রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় এলাকা ভেদে প্রায় দুই থেকে আড়াই ফুট পানি কমেছে। তবে জায়গায় জায়গায় বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সদর উপজেলার পানি সেভাবে নামতে পারছেনা। পানি যাতে নির্বিঘ্নে নেমে যেতে পারে সেজন্য এরই মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় তারা বাঁধ অপসারণের কাজ শুরু করেছেন।

সময়ের আলো/আরআই