ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

তিন কিলোমিটারে ৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব
প্রকাশ: সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১:৩৮ এএম  (ভিজিট : ২২৬)
নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থাপনা, আবাসভূমি এবং নদীভাঙন প্রবণতা কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে ‘রাজবাড়ী সদর উপজেলার চরসিলিমপুর, কালিতলা, মহাদেবপুর এলাকা পদ্মা নদীর ডান তীরের ভাঙন রক্ষার্থে পূর্ব-সতর্কতামূলক নদী তীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে প্রকল্পের ব্যয় প্রস্তাবকে অস্বাভাবিক মনে করে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।

জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে প্রাক্কলিত মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যার পুরো অর্থ খরচ করবে সরকার (জিওবি)। আর প্রকল্প প্রস্তাবে ৩ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, যা অত্যধিক বলে আপত্তি জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

কমিশন সূত্র বলছে, প্রকল্পের ৩ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণে ৪৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতি মিটারে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ২০০ টাকা যা অত্যধিক। প্রকল্পটি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উদ্যোগী সংস্থা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় মনে করছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজবাড়ী সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী বিভিন্ন স্থাপনা, সম্পদ এবং ফরিদপুর-বরিশাল এফসিডি প্রকল্পের (রাজবাড়ী ইউনিট) বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এলাকায় তীব্র খরস্রোতা প্রমত্তা পদ্মা নদীর ভাঙন প্রবণতা কমে যাবে। সেই সঙ্গে এলাকার আবাসভূমি, কৃষিজমি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ আনুমানিক ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকার সম্পদ নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন আরও বাড়বে। এ ছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে রাজবাড়ী শহর রক্ষা (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের উজানে নতুনভাবে সৃষ্ট ভাঙনকবলিত এলাকা রক্ষা পাবে বলে ডিপিপিতে উল্লেখ করেছে উদ্যোগী সংস্থা।

এদিকে প্রকল্পের ওপর যৌক্তিকতার যাচাইয়ে সভা ডেকেছে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি)। আজ সোমবার পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

৩ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণে ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-প্রধান ইসরাত জাহান সময়ের আলোকে বলেন, যেকোনো সংস্থা প্রকল্পের ব্যয় নিয়ে বেশি লিখতেই পারে। তবে সেটি যাচাই-বাছাই করা হবে।
প্রকল্পের সম্ভাব্য এ ব্যয়কে অত্যধিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রাথমিক ধারণা সভায় আলোচনার মাধ্যমে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা কমানো হবে। বাকি সিদ্ধান্ত সভার পরে জানানো হবে।

পরিকল্পনা কমিশন মতামতে জানিয়েছে, প্রকল্পটি প্রায় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের এবং পরবর্তী বছরগুলোর এমটিবিএফ পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাস্তবায়নাধীন এবং অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট এবং এমটিবিএফ সিলিনের মধ্যে একটি ফেসিয়্যাল গ্যাপ রয়েছে। এ গ্যাপ পূরণ করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় কীভাবে এ প্রকল্পের অর্থায়ন নিশ্চিত করবে তাও ব্যাখ্যা চেয়েছে কমিশন।

নদী তীর সংরক্ষণ কাজের জন্য প্রস্তাবিত ডিজাইনে বিগত কত বছরের বন্যার পানির উচ্চতা, তীব্রতা, ভেলোসিটি ইত্যাদি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে কি না তা কত বছর ফ্ল্যাড রিটার্ন পিরিয়ড ধরে তীর সংরক্ষণ কাজের নকশা প্রণয়ন করা হয়েছে তার ভিত্তিসহ তীর সংরক্ষণ কাজের ডিজাইন ক্রাইটেরিঢার ওপর একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) সংযোজন করা দরকার বলে সভায় মতামত চাওয়া হবে। প্রতিটি প্যাকেজের ব্লকের স্ট্রেনজের ও ডাম্পিং ভলিউম হ্রাস করে অর্থ সাশ্রয়ের সুযোগ আছে কি না সে বিষয়ে সভায় আলোচনা করা হবে।

নদীর তীর সংরক্ষণ কাজের চেইনেজ, স্থান (জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন), নকশা ও এ কাজের ব্যবহৃত ম্যাটেরিয়ালের বিস্তারিত বিবরণ ডিপিপিতে উল্লেখসহ সমজাতীয় চলমান অন্যান্য প্রকল্পের ন্যায় এ খাতের ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ করা যেতে পারে।

প্রকল্পটি গ্রহণের ফলে প্রস্তাবিত এলাকার উজান-ভাটি কিংবা বিপরীত পাড়ে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে তার ব্যাখ্যা ডিপিপিতে সংযোজন প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজস্ব ও মূলধন ব্যয়ের বিষয়ে সভায় আলোচনা করে পরিমাণ ও ব্যয় যৌক্তিকভাবে নির্ধারণ করা যেতে পারে।

সময়ের আলো/আরএস/ 






https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close