প্রকাশ: রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:৩৪ পিএম (ভিজিট : ১৩২৪)
মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট সেন্ট্রাল পার্ক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠা সেই মুন্নি আকতার (৩০) নামের প্রসূতি।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন নিহতের চাচাত ভাই মো. সাব্বির হোসেন।
জানা গেছে, প্রসব বেদনা উঠলে ২৫ সেপ্টেম্বর নাজিরহাটে সেন্ট্রাল পার্ক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় উপজেলার রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের গৃহবধূ মুন্নি আকতারকে। সেদিন রাতেই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুদিন থাকার পর অবস্থার আরো অবনতি হলে স্বজনেরা সেন্ট্রাল পার্ক হাসপাতালে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তোলেন। বিষয়টি ফেইজবুকে প্রচার হলে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা ওই হাসপাতালে হামলা চালায়। জনতা সেখানে ভাঙচুর করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেখানকার চিকিৎসক এবং কর্মচারীরা আত্মগোপনে চলে যান।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পুলিশ গিয়ে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। পরবর্তী ওই রোগী চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
অভিযোগের ভিত্তি করে গত বৃহস্পতিবার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেন চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াছ চৌধুরী। তদন্ত কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এরই মধ্যে রোববার সকালে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. আরেফিন আজিম বলেন, তদন্ত কমিটি ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। তবে হাসপাতাল সংলিষ্টরা পলাতক। জানাজা শেষে নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলে আগাব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসল ঘটনা উন্মোচন করা হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ন্যায় বিচার পাবেন।’
জানা যায়, নিহত মুন্নি আকতারের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত রোববার ওই হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তান হয়। কিছুদিন পূর্বে তার স্বামী অসুস্থ হয়ে মারা যান। মুন্নি ফটিকছড়ি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের জামাল বেপারির বাড়ি মৃত মো. ফোরকানের স্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত ৩০ সেপ্টেম্বর দৈনিক সময়ের আলোতে ‘ভুল চিকিৎসার অভিযোগ, ফটিকছড়িতে হাসপাতালে ভাংচুর’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সময়ের আলো/এএ/