প্রকাশ: শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪, ২:১৬ পিএম (ভিজিট : ৪৯৬)
টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা শামছুল হক মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ সরকারের সময়কালে দুর্নীতিতে জড়িয়ে তিনি প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এমনকি কলেজের জমি নিজের স্ত্রীর নামে দলিল করারও অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, ২০১৬ সালে এলেঙ্গা শামছুল হক মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন মো. আনোয়ারুল কবির। অভিযোগ রয়েছে, যোগদানের পর থেকেই কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার মোল্লার সঙ্গে আঁতাত করে কলেজে নিয়োগ বাণিজ্য শুরু করেন। ২০১৮ সালে কলেজটি পুরোপুরি সরকারিকরণ করা হয়। এ জন্য ওই বছর নিয়ম অনুযায়ী কলেজের অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল কবির কলেজের সম্পত্তির সকল কাগজপত্র ও দাগ নম্বরসহ সরকারের সঙ্গে চুক্তিপত্র করেন। এরপর থেকে শুরু করেন শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য।
আরও অভিযোগ রয়েছে, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাদের দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন শিক্ষকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয় প্রায় কোটি টাকা। এছাড়া প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের জন্য সরকারি নির্ধারিত ফি’র বাইরেও নেওয়া হয় দ্বিগুন টাকা।
এছাড়া প্রতারণার মাধ্যমে ২০১৯ সালে অধ্যক্ষের জমির পাশে কলেজের থাকা ৭৯৬ দাগের চার শতাংশ জমিও তার (অধ্যক্ষ) তার স্ত্রী মিনা বেগমের নামে আরেকজনকে দিয়ে দলিল করে নিয়েছেন। এরপর পুরো জমির ওপর চালতলা ভবন সম্পন্ন করেছেন অধ্যক্ষ আনোয়ারুল কবির।
এছাড়া ৯২৪ দাগের ২৪ শতাংশ এবং ৯২৬ দাগের ৫০ শতাংশ জমি সায়েম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির দখলে রয়েছে। সেই সায়েম উদ্দিনের কাছ থেকেও অধ্যক্ষ এবং সভাপতি মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তবে ২০১৮ সালে কলেজটি সরকারিকরণের সময় এই জমি অধ্যক্ষ নিজে সরকারকে লিখে দেন। এই একই দাগের জমি কীভাবে তার স্ত্রী কিনে নিলেন এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলেজের কয়েজন শিক্ষক জানান, প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাড়তি ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা ওঠানো হয়। আর এ টাকার অধ্যক্ষ, কলেজের সভাপতিসহ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা ভাগাভাগি করে নেন। হাসিনা সরকারের সময় ওইসব নেতাদের দাপুটে মুখ খুলতেও সাহস করতো না কেউ। বর্তমানেও একই অবস্থা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক শিক্ষক জানান, যে জমি ২০১৮ সালে অধ্যক্ষ নিজে সরকারের কাছে লিখে দেন, সেই জমি পরের বছর কীভাবে তার স্ত্রী কিনে নিলেন! এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আবার সেই জমি উদ্ধার তো দূরের কথা নিজের স্ত্রীকে দিয়েই কলেজের নামে মামলা করিয়েছেন অধ্যক্ষ আনোয়ারুল কবির।
এ বিষয়ে এলেঙ্গা শামছুল হক মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. আনোয়ারুল কবিরের সঙ্গে মোবাইলফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সময়ের আলো/জেডআই