প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪, ৮:৪২ পিএম (ভিজিট : ৪০২)
নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে পানির প্রবাহ বেশি থাকায় নতুন করে জেলাতে সার্বিকভাবে বন্যার অবনতি দেখা যাচ্ছে। জেলার আটটি উপজেলাতেই পানি বেড়েছে। তার মধ্যে সদর, চাটখিল, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ী উপজেলায় বেশি বেড়েছে বন্যার পানি। এসব উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোয় এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে কোনো ত্রাণই পৌঁছায়নি। ফলে এলাকার বানভাসিরা সীমাহীন কষ্টে দিন যাপন করছেন। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থরা ভীষণ সমস্যার ভিতরে আছে।
জেলা প্রশাসন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার আটটি উপজেলা ও সাতটি পৌরসভা বন্যায় আক্রান্ত। এসব এলাকার ১১৬৯টি স্থায়ী ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় পানিবন্দী হয়ে আছেন জেলার প্রায় ২১ লাখ মানুষ। বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৮৮টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
নোয়াখালী জেলা শহরের প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি অফিস এখনো পানিতে নিমজ্জিত। এর মধ্যে জেলা জজ প্রাঙ্গণ প্রায় হাঁটু পানিতে সয়লাব। ফলে বিচার কার্যক্রম এক প্রকার স্থবির হয়ে আছে। অতিরিক্ত পানির কারণে পুরো শহরের বাসিন্দারাই পানিবন্দী অবস্থায় আছে। শহরের আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে বানভাসিদের ভিড় লক্ষ্য করার গেছে। প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকা থেকে বন্যার স্বীকার হওয়া মানুষরা আসছে।
সূত্রে জানা গেছে, শহরের আশপাশে ও উপজেলা সদরের নিকটবর্তী এলাকার আশ্রয়কেন্দ্র ও বাসাবাড়িতে আটকে পড়ারা কমবেশি সরকারি-বেসরকারি সাহায্য ও সহায়তা বেশি পেলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বানভাসিরা তেমন খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেনা।
কারণ হিসেবে জানা গেছে, পানি বেশি থাকায় ও যোগাযোগের অভাবে এসব এলাকায় সহজে কেউ যেতে পারছেনা। জেলায় এ পর্যন্ত পানিতে ডুবে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সমুদ্রে গত তিনদিন তিন নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় বৃষ্টি হয়েছে। তবে এখন আর কোনো সতর্ক সংকেত নেই। ফলে কোনো রকম ঝড়ো হাওয়া বা বৃষ্টির আশঙ্কা নেই। আস্তে ধীরে আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং পানি ধীরে ধীরে কমে যাবে বলে আমরা আশাকরি।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, আকাশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। আশা করি বন্যার পানি কমে যাবে। আমরা সবার মাঝে সরকারি সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে নগদ ৪৫ লাখ টাকা, ৮৮২ টন চাল, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, পাঁচ লাখ টাকার শিশু খাদ্য ও পাঁচ লাখ টাকার পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। তবে বন্যা-পরবর্তী সুপেয় পানি পাওয়া ও পানিবাহিত রোগ থেকে মুক্তি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। সেটি মোকাবিলায় আমরা সজাগ আছি।
অন্যদিকে, টানা তিনদিন বৃষ্টির পর মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরের পর সূর্যের দেখা মিলেছে। এতে মানুষজন স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন।
সময়ের আলো/আরআই