প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪, ৬:২৫ এএম (ভিজিট : ২৭৬)
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে বন্যার পানিতে মাছ ধরার সময় মো. তৌহিদুল আলম (৪২) নামে এক জেলের জালে আটকা পড়েছে অদ্ভুতদর্শন সাকার মাছ। ২০২২ সালে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বিদেশি প্রজাতির মাছটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কারণ সাকার মাছ দেশীয় প্রজাতির মাছ ও মাছের রেণু খেয়ে বংশবিস্তারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন নদী ও পুকুর ভর্তি হয়ে যাচ্ছে সাকার মাছে। বন্যার পানিতে মাছগুলো পুরো দেশে ছড়িয়ে পড়ছে যা আমাদের জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
সোমবার উপজেলার পূর্ব ফরহাদাবাদ গ্রামের একটি খালে সাকার মাছের দেখা মেলে। স্থানীয়রা এটিকে বলছেন বিরল মাছ। তবে মাছটির আসল নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ।
উপজেলার পূর্ব ফরহাদাবাদ গ্রামের সাদা মসজিদ সংলগ্ন খালে জালে আটকা পড়ে মাছটি। শরীরে বাদামি রং এবং ছোট-কালো রঙের বিন্দু বিন্দু ছাপ রয়েছে। এ বৈশিষ্ট্যের কারণে স্থানীয় লোকজন এর নাম দিয়েছেন বিরল মাছ। কয়েক মাস আগেও একই প্রজাতির আরও একাধিক মাছ ধরা পড়েছিল এ অঞ্চলে।
জেলে তৌহিদুল এ মাছ ধরে লোকালয়ে নিয়ে আসেন। খাল-বিলে সাধারণত এমন মাছ মেলে না। তাই অদ্ভুতদর্শন মাছটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। মাছটি ১২ ইঞ্চি লম্বা ও ৫০০ গ্রাম ওজনের। তৌহিদুল জানান, খালে বেশ কিছু মাছ পান তিনি। সেগুলোর সঙ্গে বিরল প্রজাতির মাছটি পান।
স্থানীয় বাসিন্দা সার্ভেয়ার মো. রাশেদ সুজন বলেন, এমন মাছ দেখে আমি প্রথমে ভয় পেয়েছিলাম। কারণ এর আগে এ ধরনের মাছ দেখিনি এবং মাছের নামটিও জানা ছিল না।
ফটিকছড়ি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, সাকার নামের বিরল প্রজাতির মাছটি বন্যার পানিতে ভেসে এসেছে। মাঝেমধ্যে এ ধরনের মাছ পাওয়ার খবর পাওয়া যায় বলেও জানান তিনি।
প্রাণী গবেষকদের মতে, এটি একটি বিদেশি মাছ। সাকার মাউথ ক্যাটফিশ ইংরেজি নাম হলেও এর বৈজ্ঞানিক নাম হাইপোস্টমাস। মাছটি লরিকেরিয়েডি পরিবারভুক্ত। সাধারণত এই জাতীয় মাছগুলো মুখ দিয়ে চুষে খাবার খায়। বিভিন্ন দেশে এটি অ্যাকুয়ারিয়ামে শোভাবর্ধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পানির তলদেশে বাস করে এবং শ্যাওলা জাতীয় উদ্ভিদ খায়। স্বভাবে শান্ত প্রকৃতির এই মাছ মিঠা পানিতে বাস করে।
সময়ের আলো/জিকে