ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

ভয়াবহ বন্যায় মনোহরগঞ্জে ত্রাণের জন্য হাহাকার
প্রকাশ: সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪, ৬:৫১ পিএম  (ভিজিট : ৮৬১)
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে কুমিল্লা। দিন দিন জেলার বিভিন্ন উপজেলার পানি বেড়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বাড়ছে বন্যায় আক্রান্তের সংখ্যা। জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাই বানের পানিতে নিমজ্জিত। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা আক্রান্ত এলাকার বাজারে ফুরিয়ে আসছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যার্তরা সাহায্য-সহযোগিতা পেলেও ত্রাণ পাচ্ছেন না মনোহরগঞ্জ, লাকসাম ও নাঙ্গলকোটের লাখ লাখ পানিবন্দি মানুষ। 

এসব উপজেলার বানভাসি মানুষদের অভিযোগ, প্রচার-প্রচারণা কম থাকায় ব্যক্তি ও সংগঠন কেন্দ্রীক ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ করা বাইরের স্বেচ্ছাসেবকরা একদম আসছেন না। রোববার (২৫ আগস্ট) এমন অভিযোগ করেন তারা।

তারা জানান, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারাই ত্রাণ সহায়তা নিয়ে কুমিল্লায় আসছেন, তাদের সবাই কাছাকাছি অঞ্চল বুড়িচং বা আশপাশের উপজেলাগুলোতে প্রবেশ করছেন। মহাসড়ক থেকে দূরের উপজেলা হওয়ায় সেখানের বানভাসিদের কাছে যাচ্ছেন না কেউ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা কম থাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব এলাকার মানুষ। 

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে কুমিল্লা বন্যা শুরু হয়। এরই মধ্যে জেলার চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়াসহ জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাই বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। সবখানেই বন্যার্তদের মাঝে হাহাকার দেখা গেছে। তবে গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করার খবরে বুড়িচং উপজেলার প্লাবনের খবর বেশি প্রচার হওয়ায় সারাদেশ থেকে দলে দলে নৌকা ও ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রবেশ করছেন সেখানেই। কিন্তু ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে জেলার দক্ষিণের তিন উপজেলা। এসব এলাকায় অন্তত আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি আছেন। সরকারি ত্রাণ সেসব মানুষদের জন্য খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন সেসব এলাকার বানভাসিরা।

দুর্ভোগের চিত্র তুলে ধরে মনোহরগঞ্জ উপজেলার মৈশাতুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের আমতলী গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, মানুষের ঘরে পানি উঠে খুবই খারাপ অবস্থা এখানে। পানি নামবে, এই আশায় কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছে না। এখানে কেউ এখন পর্যন্ত বাহির থেকে ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসেনি। ব্যক্তিগত উদ্যাগে কিছু পরিবার ত্রাণ পেলেও অধিকাংশ পরিবারই অনাহারে কষ্টে রয়েছে।

একই গ্রামের বাসিন্দা রহমত উল্যাহ বলেন, এলাকাটা অনেক ভেতরে হওয়ায় কেউই সেখানে যাচ্ছেন না। যার কারণে তাদের খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থা পুরো উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামগুলোতে। সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার কম থাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব এলাকার বানভাসি মানুষজন।

মনোহরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ ঝলম ইউনিয়নের চৌরাইশ গ্রামের আবদুর রহমান লালু বলেন, ‘জলাঞ্চল’ নামে পরিচিত এ উপজেলা নিন্মাঞ্চল হওয়ায় পানিতে মানুষ খুবই কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু এখানে তেমন কোনো সহায়তা এখনো আসেনি। মানুষ কষ্টে আছে।

মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উজালা রানী চাকমা বলেন, উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত অবনতির দিকে যাচ্ছে। আজও পানি কিছুটা বেড়েছে। মনোহরগঞ্জ উপজেলার অনেক দুর্গম এলাকা রয়েছে যেগুলোতে নৌকা ছাড়া যাওয়া একেবারেই অসম্ভব। আমাদের কাছে নৌকার প্রচুর সংকট রয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে পাঠিয়ে সেসব এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন একটা মানুষও অভুক্ত না থাকে। তবে আমাদের আরও অনেক সহায়তা দরকার। আমি অনুরোধ করবো, বিত্তশালীরা বানভাসি মানুষের জন্য এগিয়ে আসুন। পুরো উপজেলার প্রায় সব সড়ক পানির নিচে। পুকুর-দিঘি থেকে শুরু করে মাছের ঘের- সব কিছুই প্লাবিত হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগ এখন অবর্ণনীয়।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close