প্রকাশ: সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০২৪, ৬:৩৬ পিএম (ভিজিট : ৫০৪)
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শহীদ রিটন উদ্দিনের পরিবারকে দেখতে তার বাড়ীতে যান কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমন্বয়ক হান্নানের বহরটি শহীদ রিটনের বাড়ি পৌঁছলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রিটনের বাবা আবুল কালাম। এসময় তাকে সান্ত্বনা দিয়ে যেকোনো প্রয়োজনে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ। পরে সবাইকে সাথে নিয়ে শহীদ রিটনের কবর জিয়ারত করেন তিনি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে ঢাকা থেকে হাতিয়ায় পৌঁছে চরকিং ইউনিয়নের ২২ নং গ্রামে এই শহীদের বাড়ি যান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ। এসময় তার সাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে আসা ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন শাখার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
শহীদ মো. রিটন উদ্দিন চাকরির কারণে ঢাকায় থাকতেন। তিনি চরকিং এলাকার বাসিন্দা মো. আবুল কালামের বড় ছেলে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন। গত ৫ আগস্ট তাকে ঢাকা থেকে হাতিয়া এনে নিজ বাড়ির কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
কবর জিয়ারত শেষে মাসুদ উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শহীদ রিটন ভাই তার রক্ত দিয়ে আমাদেরকে এক বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের পথ করে দিয়েছেন। যেখানে দুর্নীতি, অনিয়ম, অন্যায় দেখবেন সাথে সাথে তা প্রতিহত করতে হবে। যেভাবে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদ সরকারকে উৎখাত করতে সক্ষম হয়েছি, ঠিক আপনারাও সেভাবে অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। যদি ঐক্যবদ্ধ থাকেন তাহলে দেখবেন ওরা পালানোর জায়গা পাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যেকোনো প্রয়োজনে শহীদ রিটন ভাইয়ের পরিবারের পাশে আছি, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা এই পরিবারের পাশে থাকবেন। রিটন ভাই শহীদ হয়েছে। আল্লাহ যেন তাকে শহীদী মর্যাদা দান করে বেহেশতের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করেন।’
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি শহীদ রিটনের অসুস্থ নবজাতক সন্তান ও স্ত্রীর সাথে দেখা করেন সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। তিনি তাদের খোঁজ খরব নেন এবং অসুস্থ নবজাতককে কোলে নিয়ে আদর করেন। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করে সাধারণ রোগী এবং দায়িত্বরতদের সাথে কথা বলেন।
পরিদর্শন শেষে উপজেলা হাসপাতালের সামনে পথ সভায় বক্তব্যে বলেন, ‘আমি রাজনীতি করতে আসিনি। আমি কোন নেতা নয়, আমি এখনো ছাত্র। আমি আপনাদের ভাই, আপনাদের সন্তান, আপনারা আমাকে নেতা মনে করে দূরে ঠেলে দিবেন না। দ্বীপ হাতিয়ায় কোন প্রকার বৈষম্য চলবে না, থাকবেনা কোন সন্ত্রাসী। হাতিয়ার মানুষ এখন স্বাধীনভাবে বসবাস করবে।’
সভা শেষে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ নিজের পরিবার পরিজনের সাথে দেখা করতে হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের কালিরচর গ্রামের বাড়িতে যান। তার আগমনের সংবাদ শুনে সকাল থেকে ছাত্র-জনতা হাতিয়ার বিভিন্ন স্পটে সমাবেত হয়। তাকে স্বাগত জানিয়ে নানান স্লোগান দিতেও দেখা যায়।
সময়ের আলো/আরআই