দেশের বন্যাকবলিত এলাকায় সামাজিক দায়বদ্ধতা বা সিএসআর খাত থেকে ব্যাংকগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্ট থেকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, সম্প্রতি ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন অঞ্চল ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়াসহ ঘরবাড়ি, ফসল ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে অতি বৃষ্টির ফলে খাগড়াছড়ি জেলাতেও বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। আকস্মিক ফ্ল্যাশ ফ্লাড, অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে বন্যাকবলিত অঞ্চলের মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এ অবস্থায় করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের আওতায় সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের অসহায় জনগোষ্ঠীর সাহায্যার্থে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা ও ত্রাণসামগ্রী (খাদ্য, বস্ত্র, বিশুদ্ধ পানি, জরুরি ওষুধ, শিশু যত্ন ও খাদ্যসামগ্রী, পশুখাদ্য, নৌকাসহ নানা সামগ্রী) সংগ্রহের প্রয়োজন হবে। তাই আর্থিক সহায়তা ‘প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল’-এ দিতে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানায় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি (ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার)। ৭৭ উপজেলা বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন/পৌরসভা ৫৮৭টি।
১১ জেলায় মোট ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৮ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন, মারা গেছেন ১৮ জন। মারা যাওয়ার মধ্যে কুমিল্লায় ৪, ফেনীতে ১, চট্টগ্রামে ৫, নোয়াখালীতে ৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১ এবং কক্সবাজারে ৩ জন রয়েছেন।
তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে, পানিবন্দি/ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ৫২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ২ লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন লোককে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য মোট ৭৭০টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।
১১টি জেলা মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার ১৫০ টন চাল, ১৫ হাজার টন শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ৩৫ লাখ টাকা শিশুখাদ্য এবং ৩৫ হাজার গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
সময়ের আলো/আরএস/