প্রকাশ: রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪, ১১:৪৮ পিএম (ভিজিট : ২৪২)
খুলনায় ভারী বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। অবিরাম বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। একটানা বৃষ্টিতে তলিয়ে নগরীর রাস্তাঘাট অলিগলি। নগরীর নিম্নাঞ্চলের বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও তলিয়ে গেছে। গত দুদিনের বৃষ্টির কারণে শ্রমজীবী মানুষ কাজের জন্য বাইরে বের হতে পারছে না। ফলে তাদের সংসারে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে, সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েন পথচারীরা, স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীরা। নগরবাসীর অভিযোগ, একটু ভারী বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় নগরীর নিম্নাঞ্চল। বাসা-বাড়িতে ঢুকে পড়ে পানি। প্রধান প্রধান সড়কগুলোয় তৈরি হয় জলজট।
গত শনিবার প্রায় সারাদিন গুঁড়ি গুঁড়ি আবার কখনো মাঝারি বৃষ্টি হয়। গভীর রাত থেকে শুরু হয় একটানা বৃষ্টিপাত। এ-রকম বৃষ্টি চলে রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এরপর বৃষ্টি একটু কমলেও আকাশ ছিল কালো মেঘে ঢাকা।
আজ (রোববার) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, নগরীর পিটিআই মোড়, দোলখোলা, মতলেবের মোড়, রয়্যাল মোড়, স্যার ইকবাল রোডের বাইতিপাড়া এলাকা, সাতরাস্তা মোড়, বড় মির্জাপুর, টুটপাড়া, জিন্নাহ পাড়া, মিয়া পাড়া, মৌলভা পাড়া, খালিশপুরের ও দৌলতপুরের বিভিন্ন স্থান, মুজগুন্নি, রায়েরমহলসহ বিভিন্ন এলাকা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। ইজিবাইক চালক রবিউল ইসলাম বলেন, শনিবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টিতে খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ রাস্তা তলিয়ে গেছে। পানিতে ইজিবাইক চালাতে পারছি না। মেশিন জ্বলে যাওয়ার ভয় থাকে। তারপরও পেটের দায়ে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি।
নগরীর দোলখোলা এলাকার বাসিন্দা বিধান মিস্ত্রী বলেন, বৃষ্টিতে পানির জন্য আমরা বাসা থেকে রাস্তায় বের হতে পারছি না। চাকরি করি, সেখানেও যেতে পারছি না। চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। ছেলে মেয়ে স্কুলে যেতে পারিনি। রান্না ঘরে পানি ঢোকায় সকালে রান্নও হয়নি।
নগরীর রায়েরমহল এলাকার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, নগরীর মুজগুন্নি, পুলিশ লাইন, রায়ের মহলসহ বয়রা এলাকায় সড়কে অনেক পানি জমে গেছে। সেই সঙ্গে বাসাবাড়িতেও পানি প্রবেশ করছে। চলাচলে অনেক দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
মিয়াপাড়ার বাসিন্দা নিজাম উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পলিথিনসহ নানারকম ময়লা-আবর্জনায় নালা-নর্দমার মুখগুলো বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বৃষ্টির সময় ড্রেন উপচে বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া সিটি করপোরেশন নিয়মিতভাবে ড্রেন পরিষ্কার করে না। দায়সারাভাবে ড্রেন পরিষ্কার করলে এই রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হবেই। এছাড়া শুনেছি উন্নয়নের কাজ চলছে তা যে কবে শেষ হবে আর কবে নগরবাসীর ভোগান্তি যাবে তা আল্লাহই ভালো জানেন।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকায় এমন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শনিবার রাত ১২টা থেকে রোববার দুপুর ৩টা পর্যন্ত খুলনায় ৯৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এরপর থেকে বৃষ্টিপাত কমতে পারে।
সময়ের আলো/আরআই