ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ফেনী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে তবুও বাড়িঘরে বাড়ছে পানি
মিরসরাইয়ে কিছু এলাকায় পানি কমেছে দুই ফুট, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ৪০ হাজার গ্রাহক
প্রকাশ: রবিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৪, ১০:৩০ পিএম  (ভিজিট : ৬১০)
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে টানা পাঁচ দিনের বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় দুই লাখেরও বেশি মানুষ। টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে এখানকার ফেনী নদীর পানির উচ্চতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় গত বুধবার থেকে এখানকার ১১টি ইউনিয়নের প্রায় ১৬৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। অবশ্য রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে কিছু কিছু এলাকায় এক থেকে দুই ফুট পর্যন্ত পানি কমেছে। 

জানা গেছে, একদিকে বন্যায় পানিবন্দী লাখো অসহায় মানুষ। অন্যদিকে ফেনী নদীর ভাটিতে অবস্থিত দেশের বৃহত্তর সেচ প্রকল্প মুহুরীর দুটি গেইট পানির তোড়ে ভেঙ্গে গেছে। অকেজো আছে আরও দুইটি গেইট। এ কারণে একদিকে জোয়ারের সময় ফেনী নদী হয়ে অভ্যন্তরে ঢুকছে বঙ্গোপসাগরের পানি। আবার ভাটার সময় দুটি গেইট অকেজো থাকার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।
 
অবশ্য মুহুরী প্রকল্পের গেইট ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ে কথা বলতে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদ শাহরিয়ারকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

এদিকে গত কয়েকদিন বন্যার কারণে দেশের অর্থনীতির লাইফলাইন হিসেবে বিবেচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সব ধরণের যান চলাচল বন্ধ ছিলো। আজ (রোববার) সকাল থেকে ঢাকামুখী লেনে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে গত কয়েকদিন পথে আটকে থাকার দরুন মালবাহী অনেক যানবাহনে থাকা নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা ভোগ্যপণ্য নষ্ট হয়ে গেছে।

গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) কুমিল্লা জেলার চান্দিনা বাজার থেকে এক ট্রাক কাঁচা শাক-সবজি নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হন চালক রিয়াজ উদ্দিন। তিনি আজ (রোববার) বেলা ১২টার দিকে মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট এলাকায় পৌঁছালে তার সাথে কথা। এসময় তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রামের রিয়াজ উদ্দিন বাজারের কয়েকজন পাইকারি বিক্রেতা কুমিল্লার চান্দিনা বাজার থেকে কাঁচা মরিচ, ধনিয়া পাতাসহ বেশ কিছু শাক-সবজি নিয়ে ট্রাক লোড করেন। কিন্তু গত তিন দিনেরও বেশি সময় ফেনীর লেমুয়া এলাকায় আটকে থাকার দরুন সব কিছু পচে নষ্ট হয়ে গেছে।’

মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার ইনজার্চ (পরিদর্শক) সোহেল সরকার জানান, আজ (রোববার) সকাল থেকে ঢাকামুখী লেন পুরোপুরি চালু হয়েছে। চট্টগ্রামমুখী লেনও স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

মিরসরাই উপজেলা দুর্যোগ মোকাবেলায় গঠিত কমিটির অন্যতম সদস্য, মিরসরাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির খাঁন বিকেলে জানান, আজ (রোববার) সকাল ১১টা পর্যন্ত উপজেলার ৭৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে ২০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই আবার আশ্রয় কেন্দ্র থেকে আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতেও আশ্রয় নিচ্ছে। কেন্দ্রীয়ভাবে মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন ত্রাণ কার্যক্রম মনিটরিং করছে।

মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী সর্বশেষ বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে জানান, শনিবার রাত থেকে আজ (রোববার) পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। কিছু কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করেছে। সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, যুব রেডক্রিসেন্ট এ্যালমনাই, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষার্থীরা পৃথক পৃথকভাবে বানভাসি মানুষদের উদ্ধার এবং তাদের মাঝে বিশুদ্ধ পানীয়, ওষুধ ও খাবার বিতরণ করছেন।  

চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-৩ বারইয়ারহাট জোনাল অফিস এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হেদায়েত উল্যাহ ও মিরসরাই জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আদনান আহমেদ জানান, কিছু কিছু এলাকায় পানির তীব্রতা কমে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। এখনো বন্যাকবলিত অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সেবা দেয়া যাচ্ছে না।   

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  বন্যা পরিস্থিতি-বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন মানুষ   পানিবন্দী মানুষ   মিরসরাই-চট্টগ্রাম  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close