ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বজ্রপাতে অপমৃত্যু থেকে বাঁচার আমল
প্রকাশ: শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৪, ১:৪৬ এএম  (ভিজিট : ২৫০)
ঝড়-বৃষ্টির সময় বজ্রপাত ও বজ্রপাতে অপমৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক। পবিত্র কুরআনে বজ্রপাতের কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। কুরআন মাজিদের একটি সুরার নাম ‘রাদ’, যার অর্থই হচ্ছে ‘বজ্র’। কুরআন মাজিদের বিবরণ থেকে জানা যায়, বজ্র হচ্ছে আল্লাহ তায়ালার একটি শক্তিশালী নিদর্শন। এর মাধ্যমে তিনি পৃথিবীবাসীকে ধমক দেন ও সতর্ক করেন।

ইরশাদ হয়েছে, ‘বজ্র তাঁরই (আল্লাহর) তাসবিহ ও হামদ জ্ঞাপন করে। এবং তাঁর ভয়ে ফেরেশতাগণও (তাসবিহরত আছে)। তিনিই গর্জমান বিজলি পাঠান, তারপর যার ওপর ইচ্ছা তাকে বিপদরূপে পতিত করেন। আর তাদের (কাফেরদের)  অবস্থা এই যে, তারা আল্লাহ সম্বন্ধেই তর্ক-বিতর্ক করছে, অথচ তাঁর শক্তি অতি প্রচণ্ড।’ (সুরা রাদ, আয়াত : ১৩)

মানুষের কৃতকর্মই বজ্রপাতের মৌলিক  কারণ। অত্যাচার, নির্যাতন, সুদ, ঘুষ, জিনা, ব্যভিচার, দুর্নীতি, অশ্লীলতা হেন অপরাধ নেই যা আজ সমাজময় ছড়িয়ে পড়ছে না। পাপের সমুদ্রে আকণ্ঠ ডুবে আছি আমরা। আমাদের কৃতকর্মের কারণেই আজ সর্বত্র বিপর্যয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ নিজ হাতে যা কামায়, তার ফলে স্থলে ও জলে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে, আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্তৃক কৃতকর্মের স্বাদ গ্রহণ করাবেন সে জন্য; হয়তো এর ফলে তারা ফিরে আসবে।’ (সুরা রুম, আয়াত : ৪১)

আমরা যদি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহ তায়ালার ইবাদতে নিমগ্ন থাকি তা হলে আল্লাহ আমাদের সবাইকে বজ্রপাত থেকে রক্ষা করবেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের প্রবল পরাক্রমশালী প্রভু বলেছেন, যদি আমার বান্দারা আমার বিধান মেনে চলত, তবে আমি তাদের রাতের বেলায় বৃষ্টি দিতাম, সকাল বেলায় সূর্য দিতাম এবং কখনো তাদের বজ্রপাতের আওয়াজ শোনাতাম না।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৭০৮)

আমাদের উচিত সবসময় তওবা-ইস্তেগফার করে পাক পবিত্র জীবনযাপন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করা। পাশাপাশি বজ্রপাত থেকে বাঁচতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সুন্নাহর অনুসরণ করা। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বজ্রের আওয়াজ শুনতেন তখন এই দোয়া পড়তেন, ‘আল্লাহুম্মা লা তাকতুলনা বিগাযাবিকা ওয়ালা তুহলিকনা বিআযাবিকা ওয়া আফিনা কাবলা যালিকা’, অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমাদের মেরে ফেলবেন না। শাস্তি দিয়ে ধ্বংস করে দেবেন না। এই বজ্রপাতের আগেই আমাদের হেফাজত করুন’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ৮৭০৮)।

আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) তার তাফসির গ্রন্থে উল্লেখ করেন, ইবনে আবি জাকারিয়া বলেন, বর্ণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি বজ্রের আওয়াজ শুনে এ দোয়া পড়বে, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’, সে বজ্রের আঘাতপ্রাপ্ত হবে না (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ২৯২১৩)। তাই আসুন, আমরা সবাই তওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে আল্লাহ অভিমুখী হই। পাপমুক্ত পবিত্র জীবনযাপন করি। নবীজি (সা.)-এর সুন্নতের পবিত্র পরশে বজ্রপাতের মতো ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে বজ্রপাতসহ সকল প্রকার বিপদাপদ থেকে হেফাজত করুন।


সময়ের আলো/আরএস/





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close