ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

কুষ্টিয়ার ঐতিহাসিক ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ
প্রকাশ: শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪, ২:১৪ এএম  (ভিজিট : ২৪২)
সুলতানি ও মোগল আমলে মুসলিমদের হাতে গড়ে ওঠে অসংখ্য স্থাপত্য। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর এসময় এ দেশে কতটি মসজিদ আছে তা প্রায় অনেকটাই অজানা। কেননা এখানে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি যেমন পেয়েছে তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে মসজিদের সংখ্যা। 

প্রকৃতপক্ষে এ দেশে প্রায় প্রতিটি গ্রামেই মসজিদ রয়েছে। তথাপি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এ দেশে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার ৩৯৯টি মসজিদ রয়েছে। তবে এর সংখ্যা এখন বৃদ্ধি পেতে পারে। কেননা পরবর্তীতে অনেক জেলাতেই ক্রমে মসজিদের সংখ্যা বেড়েছে। তন্মধ্যে কুষ্টিয়া জেলায় অবস্থিত ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ অন্যতম। অন্যতম এই জন্যই মূলত এটি প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনে রূপ লাভ করেছে। এ ছাড়া জেলা সদরের ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত বলে গ্রামের নাম অনুসারে এই মসজিদটির নাম রাখা হয়েছে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ। কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় ২১ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক থেকে প্রায় ৬.৫ কিমি সরাসরি পশ্চিমে অবস্থিত মসজিদটি।

বর্তমানে এই মসজিদটির মালিক ও পরিচালক হচ্ছে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর। এ ছাড়া মসজিদটি বিখ্যাত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো এর সুদূরপ্রসারী ইতিহাস। পক্ষান্তরে সঠিক কোনো তথ্য না পাওয়া গেলেও মসজিদ সম্পর্কে জনশ্রুতিতে অনেক তথ্য ও ইতিহাস উঠে আসে। 

জনশ্রুতি অনুসারে, ইরাকের শাহ সুফি আদারি মিয়া ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আস্তানা তৈরি করেন। তিনিই ওই সময় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। স্থানীয়রা এটাও মনে করেন মসজিদের পাশেই উক্ত সুফি সাধকের কবর রয়েছে। বর্তমান মসজিদটির দ্বারপ্রান্তে সংরক্ষিত ফলকে এটি মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় তৈরি করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে প্রত্নতাত্ত্বিক কোনো নথি পাওয়া যায়নি। পরিকল্পনা, নির্মাণশৈলী ও অলংকরণের কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যের আলোকে এ মসজিদের সঙ্গে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট দুর্গের মসজিদ (১৭৪০-৪১ সাল) এবং নোয়াখালীর বজরা মসজিদের (১৭৪১-৪২ সাল) সাদৃশ্য লক্ষ করে অনুমান করা যায় যে, মসজিদটি সম্ভবত আঠারো শতকের মাঝামাঝি কোনো এক সময়ে নির্মিত হয়েছিল।

১৯৬৯ সালে এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের তালিকায় নথিভুক্ত করা হয়েছিল। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের চুক্তি অনুযায়ী এটি ঝাউদিয়া গ্রামের হাসান আলী চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যরা তত্ত্বাবধান করে আসছেন। তবে বর্তমানে মসজিদটি সরাসরিই বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর পরিচালনা ও দেখাশোনা করে থাকে।

এ ছাড়া মসজিদটির অবকাঠামো সম্পর্কে বলা যায়, এই মসজিদটি নির্মাণে ইট, পাথর, বালু ও চিনামাটি ব্যবহার করা হয়েছে। ঝাউদিয়া মসজিদটি পাঁচটি গম্বুজ ও প্রবেশপথের কাছে দুটি মিনার নিয়ে গঠিত। বর্তমানে এটি কুষ্টিয়া জেলার বিখ্যাত মসজিদগুলোর মধ্যে ঐতিহ্যবাহী একটি মসজিদ। প্রতি বছর এখানে অনেক দর্শনার্থী এসে থাকেন। তবে কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ^বিদ্যালয় অবস্থিত হওয়ায় দর্শনার্থীদের অধিকাংশই থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দেশ-বিদেশের গবেষক, পর্যটক, প্রত্নতত্ত্ববিদরাও স্থাপনাটি পরিদর্শনে আসেন।


সময়ের আলো/আরএস/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close