গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালী জেলা শহরসহ নয়টি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধ দেখা দিয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। জলাবদ্ধতার কারণে পুরো জেলাবাসীর নাকাল অবস্থা, থমকে গেছে জীবনযাত্রা। জলাবদ্ধতার কারণে ঘর থেকে বের হতে না পারায় নিন্মবিত্তরা রয়েছে খাদ্য সংকটে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার শহরের অধিকাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। তাছাড়া শহরের বাসা-বাড়িতেও ঢুকে গেছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে বাসিন্দারা। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ায় প্রায় অনেকে বন্ধ রেখেছেন প্রতিষ্ঠান। প্রায় প্রতিটি সড়কের পাশের পানি নিষ্কাশনের নালা-ড্রেন উপচে পানি প্রবাহিত হচ্ছে সড়কের ওপর দিয়ে। এতে বৃষ্টির পানির সঙ্গে ময়লা পানি মিশে একাকার হয়ে গেছে।
হাউজিং এলাকার বাসিন্দা মনির আহমদ বলেন, টানা বৃষ্টিতে পুরো এলাকার সড়কগুলো পানিতে ডুবে গেছে। পৌর কর্তৃপক্ষ সময় মতো ড্রেন ও নালাগুলোর পরিষ্কার না করায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু পৌরসভাতো সময় মতো তাদের ট্যাক্স নিয়েছে। সেবা দিতে পারেনি। তাদের উদাসীনতার কারণে আজ এই অবস্থা।
লক্ষীণারায়ারষপুর গ্রামের আনিসুর রহমান জানান, যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে ঘরের ভিতরেও পানি ঢুকে যাবে। এমনিতে ঘর থেকে বের হলেই হাঁটু সমান পানি। এই পানি মাড়িয়েই অফিসে যেতে হচ্ছে।
হরিনারায়ণপুরে বাসিন্দা আকমল শুভ বলেন, পানির নামান যে নালা বা ড্রেনগুলো রয়েছে তা প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে। এগুলোর যদি উদ্ধার করে পরিষ্কার করা হয় তার হলে অধিকাংশ জমে থাকা পানি নেমে যাবে। তাছাড়া মাটি ফেলে অনেকে বাঁধের মতো করে রেখেছে, সেগুলোও কেটে দিলে দ্রুত পানি নেমে যাবে।
মধুসুদনপুর গ্রামের জিয়াউর রহমান বলেন, বাড়ির উঠনে প্রচুর পানি। আশপাশের নালায় জমে থাকা ময়লা আবর্জনাসহ বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন।
শহরের একটি কলোনির নিন্ম আয়ের মো. হেলাল বলেন, আমরা দিনে এনে দিন খাই। গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টির কারণে কাজও বন্ধ। পুরা শহরে পানি আরে পানি। ফলে আমরা গরীবরা রয়েছি খাদ্য সংকটে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা পায়নি।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, টানা বৃষ্টির ফলে জেলার বেশির ভাগ প্লাবিত হয়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে তিনি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া পানিবন্দী মানুষের জন্য শুকনা খাবার ও নগদ অর্থও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নিজ নিজ এলাকার লোকজনের পাশে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। সার্বিক বিষয়টি এরই মধ্যে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
সময়ের আলো/এএ/