ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান
নাজমুলের শেষ বিদায়ের সঙ্গী বিধবা মায়ের চোখের জল
প্রকাশ: বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪, ৪:৩৮ এএম  (ভিজিট : ২৯৪)
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত ৪ আগস্ট সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নিয়ে ঢাকার আশুলিয়া বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন রিকশাচালক বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে পোশাক কারখানায় যোগ দেওয়া নাজমুল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট মারা যান নাজমুল। পরিবার, স্বজন ও এলাকাবাসী এক বুক কষ্ট চেপে তাকে বিদায় জানান। নাজমুলের শেষ বিদায়ের সঙ্গী হয় বিধবা মায়ের চোখের জল।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শামিল হয়ে অধিকার আদায়ের মিছিলে গিয়েছিলেন গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামের নাজমুল হোসেন (২৫)। রিকশাচালক বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে বছর খানেক আগে ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় একটি তৈরি পোশাক শিল্প কারখানায় কাজে যোগ দেন তিনি। স্বপ্ন ছিল চাকরি করে অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে সংসার সাজাবেন। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।

মঙ্গলবার সরেজমিন নাজমুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছেন মা গোলেনুর বেওয়া। সন্তান হারানোর শোক এখনও থামেনি মায়ের আর্তনাদ। নাজমুল বাড়ি ছেড়েছিলেন পরিবারের স্বপ্ন বাস্তবায়নে। সেই স্বপ্ন পুলিশের গুলিতে চুরমার হয়ে গেছে। সন্তান হারানো বিধবা মায়ের চোখের জলের প্রতিটি ফোঁটায় যেন ঝরে পড়ছে নাজমুলের একেকটি তাজা স্বপ্ন!
স্বজন ও এলাকাবাসী জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সারা দেশ যখন উত্তাল, ঠিক সেই সময়ে আন্দোলনে যোগ দেন গার্মেন্টসে কর্মরত নাজমুলও। গত ৪ আগস্ট আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন তিনি। গুলি লাগে নাজমুলের পেটে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট সন্ধ্যার পর মারা যান নাজমুল। স্বজনরা ধারদেনা করে তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এনে ১০ আগস্ট স্থানীয় কবরস্থানে সমাহিত করেন।

নিহত নাজমুল হোসেনের মা গোলেনুর বেওয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ৪ শতক বসতভিটা ছাড়া আর কোনো সহায়-সম্বল নেই। একমাত্র ছেলে নাজমুল। পিতৃহারা দুই মেয়েকে অতিকষ্টে বিয়ে দিয়েছি। স্বপ্ন ছিল ছেলেটা চাকরি করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাবে। কিন্তু পুলিশের গুলিতে সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। এখন কে ধরবে সংসারের হাল?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকেই। অনেকে আহত হয়ে এখনও কাতরাচ্ছেন হাসপাতালের বিছানায়। তাদের অনেকেই সামর্থ্যরে অভাবে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত-আহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গাইবান্ধাবাসী ও বিশিষ্টজনরা।

এলাকাবাসী। এরপর তাকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ডাকাত সোহেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর তাকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।


সময়ের আলো/আরএস/





https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close