ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ছয় দফা দাবিতে জাবির নারী শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০২৪, ৩:১২ এএম  (ভিজিট : ২২৬)
লিঙ্গ সংবেদনশীলতা প্রসঙ্গে একাডেমিক ও পেশাগত দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের প্রধান হিসেবে নিয়োগ এবং সেলের প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ ছয় দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৯ আগষ্ট)  দিবাগর রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের সামনে থেকে একটি মশাল মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি  সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে শেষে হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা। এতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকজন নারী শিক্ষকও অংশ নেন। সমাবেশের পরে রাত ১ টা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের সামনে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়। 

শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো- হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে যৌন নিপীড়ন সেলে আসা অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে হবে, প্রত্যেক এডাকেমিক বিল্ডিংয়ে নারীদের জন্য পর্যাপ্ত টয়লেট নিশ্চিত করতে হবে এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক পাবলিক টয়লেট স্থাপন করতে হবে, প্রতিটা হলে ও বিভাগে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে,নিরাপত্তার ও রাতের অজুহাতে নারীদের হলের ছাদ, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আড্ডারস্থল সহ বিভিন্ন জায়গায় নারীদের বিচরণ সীমিত করার প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে, সান্ধ্য আইন প্রয়োগ করে নারী শিক্ষার্থীদের হলের প্রবেশের সময় সীমা নির্ধারণ করার পায়তারা বন্ধ করতে হবে।

সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী  সুমাইয়া জাহান। তিনি বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েরা কখনো দমে যাওয়ার পাত্র ছিল না এখনও নেই। আমরা যেমন আমাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের জবাবও দিতে পারি তেমনি অন্য কারো সঙ্গে হওয়া অন্যায়েরও জবাবও দিতে পারি। খুবই নিরাশাজনক বিষয় হলো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় কাঠামো আমাদের মেয়েদের এই প্রতিবাদী সত্ত্বাকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না বরং দমানোর চেষ্টা করে। গত পরশুদিন ক্যাম্পাসের একজন নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। এরকম ঘটনা প্রায় ঘটতে দেখা যায়। আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল গঠন করা হয়েছি। কিন্তুু সেটির কার্যক্রম একেবারেই সীমিত। এই সেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, যে সব ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী সেখানে অভিযোগ করে উল্টো তাদেরকেই দোষী সভ্যাস্ত করা হয়। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোতে যদি এত বড় ছিদ্র থাকে তাহলে রাষ্ট্রের প্রসঙ্গ আরও বিশাল। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অসংখ্য নিপীড়নের ঘটনা ঘটনা ঘটেছে। একজন মেয়ে হিসেবে জন্ম নেওয়ার ফলে আমাদের যে অরনের সহিংসতার শিকার হতে তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা চাই আমাদের দাবিগুলোকে দাবি হিসেবে না ভেবে মেয়েদের প্রতি সকল বৈষম্য ও সহিংসতা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।’ 

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক স্নিগ্ধা রিজওয়ানা বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের জন্য একটি উদাহরণস্বরূপ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রায়ই ধর্ষক মানিককে নিয়ে কথা শোনা যায়, কিন্তু কেউই জানতে পারেনি যে আসলে কাকে ধর্ষণ করা হইছিলো। প্রশাসন থেকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে আসলে কাকে ধর্ষণ করা হয়েছে তখন জাহাঙ্গীরনগরের মেয়েরা বলেছিলো আমদের সবাইকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই ' আমরা সবাই ' অনেক বড় একটা স্বর। যদি আমরা ভাবি ওই মেয়েটির পাশে আমরা দাঁড়াবো না তখন আমরা সবাই দুর্বল হয়ে পরবো। ধর্ষণের জন্য শরীর লাগে না, শরীর দেখে ধর্ষণ হয় না, ধর্ষণ করা হয় ক্ষমতা সম্পর্ক জায়েজ করার জন্য। আমাদের মনে রাখতে হবে মেয়ে মানুষের জন্ম শুধু বিনোদনের জন্য না, মেয়ে মানুষ শুধু শরীর আর সৌন্দর্যের জন্য না। কোনো মেয়ের জন্ম শুধুমাত্র জন্মদানের জন্য না,কোনো মেয়ে কোনো পুরুষের থেকে কম না এটা আমাদের সবার মনে রাখতে হবে।’

সময়ের আলো/জিকে




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close