ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

আকস্মিক ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ, হুমকিতে মহাসড়ক
প্রকাশ: শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০২৪, ২:৩৮ এএম  (ভিজিট : ২৭২)
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে। এতে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক হুমকির মুখে রয়েছে। আকস্মিকভাবে শুরু হওয়া ভাঙনে এরইমধ্যে বিলীন হয়েছে কৃষিজমি, ঘরবাড়ি, রাস্তা ও বাঁধ। নদী তীরবর্তী জনপদ টিকিয়ে রাখতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন আতঙ্কিত এলাকাবাসী। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে এই ভাঙন তীব্র হয়েছে বলে দাবি তাদের। 

সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা ভাঙছে। ফলে ভেড়ামারা উপজেলার কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক ও রায়টা বেড়িবাঁধ এখন হুমকির মুখে। রায়টা বেড়িবাঁধ ভাঙন থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ৪ হাজার পরিবারের বাড়িঘর। বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা বেড়িবাঁধের পাশেই রায়টা পাথর ঘাট। অন্যতম সুন্দর্যময় দর্শনীয় স্থান রায়টা পাথর ঘাট। এখানে রয়েছে পিকনিক স্পট। উপজেলার ফয়জুল্লাহপুরে ১ কিলোমিটার, মসলেমপুরের দুইটি পয়েন্টে ৬০০ মিটার ও ৪০০ মিটার এলাকায় পদ্মা নদীর ডানতীরে ভাঙন হচ্ছে।  এর ফলে এসব পয়েন্টে নদী ভেঙে নিয়ে যাচ্ছে আবাদি জমি। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রায়টা বেড়িবাঁধ ভাঙতে শুরু করেছ। এই বাঁধ ভেঙে গেলে রায়টা নতুন পাড়া, ফয়জুল্লাপুর এই দুইটি গ্রাম আগে পানিতে ডুবে যাবে। পানিবন্দি হয়ে পড়বে প্রায় ৩ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি। অপরদিকে ভেড়ামারার ১২ মাইল টিকটিকি পাড়ার সামনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কয়েকশত একর ফসলি জমি। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণেই পদ্মায় এমন তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, ভাঙন রোধে জরুরিভাবে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হবে। ভাঙন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে দ্রুতই কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। দ্রুতই জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে রাখা হবে। ভেড়ামারার মসলেমপুর এলাকায় ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড পশ্চিমাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাহজাহান সিরাজসহ পানি প্রকৌশলীরা। নদী তীরে ব্যবসায়ীদের জড়ো করে রাখা বালুর স্তূপ ভাঙন তীব্র করছে বলে জানান প্রকৌশলীরা।

ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুণ্ডু বলেন, এখন যে ভাঙন দেখা দিয়েছে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের উদ্যোগ রয়েছে দুয়েক দিনের মধ্যেই ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হবে। পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য নিয়মিত আভিযান চলবে।

এলাকাবাসী সালাম হোসেন বলেন, ভেড়ামারা ১২ মাইল মসলেমপুর এলাকায় পদ্মায় বৈধ বালুমহাল না থাকলেও প্রভাবশালীরা অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করেছেন। এর ফলে পানির গতিপথ পরিবর্তন হয়ে নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে এসব এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইটভাটা, মসজিদ, হাট-বাজার ও রাস্তাঘাট। অপরিকল্পিত বালু উত্তোলন ও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কারণে ভেড়ামারায় দিনদিন  ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করছে।

বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন বলেন, প্রতি বছর পদ্মায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রায়টা বেড়িবাঁধে পানির আঘাত হানে। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই এলাকার মানুষ। এবারও তাই হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে বাহাদুরপুর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেক গ্রাম ডুবে যাবে।

ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন বলেন, ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ ও নৌপুলিশের সমন্বয়ে পদ্মা নদীতে একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close