ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষায় চরম বিপর্যয়
প্রকাশ: শুক্রবার, ১৬ আগস্ট, ২০২৪, ৫:৩০ এএম  (ভিজিট : ২৯২)
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন। এমনকি কলেজ, স্কুলের প্রধানরাও পদত্যাগ করছেন। দীর্ঘ এক মাস ধরে কার্যত বন্ধ আছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আগামী রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে। এখনও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হয়নি। দেশের পুরো শিক্ষাঙ্গনে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংস রূপ নিলে গত ১৬ জুলাই রাতে সারা দেশে স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিকসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকার গঠনের পর বদলে যেতে থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চিত্র। দলীয় মনোভাবাপন্ন উপাচার্যদের পদত্যাগের দাবিতে সরব হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অথবা নিজে থেকেই পদত্যাগ করছেন তারা। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা এখনও পদত্যাগ করেনি তাদের পদত্যাগে আলটিমেটাম দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এর সঙ্গে দেশের সরকারি কলেজের অধ্যক্ষরাও পদত্যাগ করছেন।

বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দেশনা দিয়েছেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আদেশটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, সব সরকারি-বেসরকারি-স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর, মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতর, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ সিন্ডিকেট সভা ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এর আগে বুধবার দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়।

এর আগে সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচি নিয়ে প্রজ্ঞাপন বাতিল করাসহ তিন দফা দাবিতে ১ জুলাই থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন শুরু করেন। 

এ কারণে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।

চলতি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির ক্লাস এখনও শুরু হয়নি। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি শিক্ষা বোর্ডগুলো। নতুন করে একাদশে ভর্তির সময় বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা সময় বাড়ানোর আবেদন করায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। 

আগামী ১৮ আগস্ট রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। ২১ আগস্ট এ ধাপে আবেদনকারীদের ফল প্রকাশ করা হবে। ২২-২৪ আগস্ট পর্যন্ত নির্বাচন নিশ্চায়ন শেষে ২৫ আগস্ট কলেজে চূড়ান্ত ভর্তি করা হবে। চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১টি শিক্ষা বোর্ডে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন পাস করে। সারা দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে ২৫ লাখের মতো। একাদশের ক্লাস শুরুর দিন এখনও ঠিক হয়নি।

গত এক মাসে কয়েক দফা স্থগিত করা হয় এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সময়সূচিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হবে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সহিংস রূপ নিলে গত ১৬ জুলাই রাতে সারা দেশে স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিকসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ১৮ জুলাইয়ের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেলে ১ আগস্ট পর্যন্ত উচ্চ মাধ্যমিকের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ৪ আগস্ট থেকে পূর্বঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই পরীক্ষাগুলোও স্থগিত হয়ে যায়। বারবার স্থগিতের পর ১১ আগস্ট থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা শুরুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সরকার পতনের পর সহিংসতায় বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র পুড়ে গেলে পরীক্ষা ফের স্থগিত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৩০ জুন থেকে সিলেট বোর্ড ছাড়া সারা দেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। তবে বন্যার কারণে সিলেট বোর্ডের পরীক্ষা ৯ জুলাই শুরু হয়। পূর্বঘোষিত পরীক্ষাসূচি অনুযায়ী ১১ আগস্ট লিখিত পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন ১১ সেপ্টেম্বর পর স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেওয়া হবে। নতুন পরীক্ষাসূচি অনুযায়ী ৮ অক্টোবর পরীক্ষা শেষ হবে।


সময়ের আলো/আরএস/ 




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close