প্রকাশ: বুধবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৪, ৪:৪৬ এএম (ভিজিট : ২৭০)
বন্যা, খড়া ও অতিবৃষ্টি কুড়িগ্রামের কৃষিতে মারাত্মক আঘাত হেনেছে। আমন বীজতলা, শাকসবজি, পাট ও আউশসহ বিভিন্ন ফসলের হাজার হাজার হেক্টর জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নিম্নাঞ্চলের পাটের আবাদ। এবারে জেলায় কৃষিতে ১০৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যার অর্থেকেরও বেশি পাটে।
ধরলা, দুধকুমার, জিঞ্জিরাম, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র-এই পাঁচ আন্তঃসীমান্ত নদীসহ ১৬ নদ-নদীর জেলা কুড়িগ্রাম। ফলে বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখানে লেগেই থাকে। এবার এপ্রিল ও মে মাসে বৃষ্টি হয়নি। ছিল খড়া। এরপর পুরো জুন মাসে অতিবৃষ্টি হয়েছে। যার পরিমাণ ১ হাজার ১০০ মিলিমিটার বলে জানিয়েছে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস। এরপর পরেই জুলাইয়ের প্রথম থেকে শুরু হয়েছে বন্যা। দুই সপ্তাহ ধরে বন্যা চললেও এখন পর্যন্ত নিম্নাঞ্চল থেকে পুরোপুরি পানি সরে যায়নি।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১৭ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও খড়ার কারণে তা অর্জিত হয়নি। আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ২৫৬ হেক্টর জমিতে। এরপর অতিবৃষ্টি ও বন্যায় ২ হাজার ৮৮৪ হেক্টর জমির পাট সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়েছে।
জেলা সদরের যাত্রাপুর ও পাঁচগাছী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলো ঘুরে দেখা গেছে, পানিতে ডুবে থাকায় অনেক জমির পাটগাছ মরে গেছে। চাষিরা সেই পাটগাছ কেটে এনে পাটখড়ি হিসেবে ব্যবহারের জন্য শুকাচ্ছেন। কিছু কিছু চাষি পাট জাগ দিয়ে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন। তবে যেসব ক্ষেত থেকে পাট পাওয়া গেছে তার উৎপাদন ও মান ভালো হয়নি। ফলে লাভ তো দূরে থাক আবাদ খরচ তোলা নিয়ে দুশ্চিতায় পড়েছেন পাট চাষিরা।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ধরলার পাড় এলাকার কৃষক গোলাম রব্বানী বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছি। আর অল্প কিছু দিনের মধ্যে পাট কাটা হতো। এর মধ্যে বন্যায় পাট তলিয়ে সব গাছ মরে গেছে। এখন খড়ি করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই পাট কেটে খড়ির জন্য শুকাচ্ছি।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মামুনুর রহমান জানান, জেলায় এবার ২১ হাজার ৩৪৬ জন কৃষকের ১০ হাজার ২৪০ টন পাট উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা টাকার অঙ্কে প্রায় ৫৬ কোটি টাকার মতো বলে জানিয়েন তিনি। তিনি আরও জানান, নিম্নাঞ্চল থেকে বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রোপা আমন আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি দেরিতে নামলে আগাম রবি ফসল আবাদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
সময়ের আলো/আরএস