সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে হিন্দু জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে সোমবার (১২ আগষ্ট) সকালে রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় পৌরসভা প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে প্রতিবাদ সমাবেশে রূপ নেয়।
বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, যখনই দেশে কোনও ধরনের পালাবদল শুরু হয়, তখনই মৌলবাদী গোষ্ঠী হামলা শুরু করে সংখ্যালঘু মানুষের ওপর। ১৯৭১ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে যেসব সংখ্যালঘু নিপীড়ন, হত্যা হয়েছে তার কোনও বিচার না হওয়ার কারণে বারবার একটি গোষ্ঠী সনাতনীদের ওপর হামলার সাহস দেখাচ্ছে।
বক্তারা শপথাবদ্ধ হয়ে আরও বলেন, একটি গোষ্ঠী চায় এদেশ থেকে সনাতনীরা চলে যাক, সনাতনী শূন্য করার নীলনক্সা নিয়ে তারা কাজ করছে, কিন্তু এদেশ ছেড়ে কোনও সনাতনী কোথাও যাবে না।
বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে উত্থাপিত দাবিগুলোতে স্থান পেয়েছে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন, ক্ষতিগ্রস্থতে ক্ষতিপূরণ প্রদান, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করন, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করা, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টগুলোকে ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ। দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং হোস্টেলে প্রার্থনাকক্ষ বরাদ্দ। সাংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন, শারদীয় দূর্গাপূজায় ৫দিন সরকারি ছুটি দেওয়ার দাবি করা হয়।
সমাবেশ থেকে উত্থাপিত এই ৮ দফা ছাড়াও পার্বত্যাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিত্বশীল প্রতিষ্ঠান তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এ হিন্দু সম্প্রদায়ের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন করে নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালীন সময়ে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
সমাবেশে বিশেষ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সহিংসতার বিচারসহ আট দফা দাবি তুলে ধরেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমম্বয়ক মিশু দে। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমম্বয়ক অজিত শীল, রাজু শীল, রাধা রাসবিহারী মন্দিরের অধ্যক্ষ নিতাই নুপুর দাস ব্রহ্মচারী প্রমূখ ।