ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

কুড়িগ্রামে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে চলছে অবাধে মাছ নিধন
প্রকাশ: রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০২৪, ১১:৩৬ এএম  (ভিজিট : ৩৮৪)
কুড়িগ্রামে উলিপুরে নিষিদ্ধ রিং ম্যাজিক (চায়না) ডারকি জাল দিয়ে অবাধে মাছ নিধনের ফলে বিলুপ্ত হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। 

রোববার (১১ আগস্ট) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, নিষিদ্ধ রিং ম্যাজিক (চায়না) ডারকি জাল দিয়ে অবাধে দেশীয় প্রজাতির পোনা মাছ নিধন করছেন অসাধু জেলে ও স্থানীয়রা। এতে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির পোনা মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ ধরা পড়ছে এ সব জালে। ফলে ক্রমেই মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে উপজেলার নদ-নদীসহ বিভিন্ন খাল-বিল ও জলাশয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রিং  ম্যাজিক (চায়না) ডারকি জাল সাধারণত এক থেকে দেড় ফুট উচ্চতা ও ৫০ থেকে ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং অতি ক্ষুদ্র ফাঁস যা মশারীর মতো ঢলুক আকৃতির হয়। লোহার রডের রিং দিয়ে খোপ আকারে বাক্স তৈরি করে চারপাশ অতিসুক্ষ্ণ জাল দিয়ে ঘেরাও করে তৈরি করা হয়। ফলে দু'দিক থেকেই মাছ ঢুকতে পারে। একটি রিং ম্যাজিক (চায়না) ডারকি জালের দাম আকার ও মান ভেদে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে অত্যন্ত সুকৌশলে ধুমছে বিক্রি হচ্ছে এই চায়না ম্যাজিক জাল। এ জাল দিয়ে অবাধে ধরা হচ্ছে শোল, টাকি, কই, পুঁটি, শিং, ট্যাংরা, খইলশা, বাইন, কুঁচে, চেলা, তেলাপিয়া, মাগুর, ছোট চিংড়ি, বৈরালি মাছের পোনা, কই, পাবদা, পাঙাশ, রুই, কাতল, আইড় ও বাইলাসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ।

এমনকি ব্যাঙ, সাপ, কচ্ছপ, শামুক, ছোট শামুকসহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণীরাও মারা পড়ছে। ফলে হুমকিতে পড়েছে এসব জলজ প্রাণীর জীবনচক্র। ধরলা ও তিস্তা নদীসহ উপজেলা ছোট বড় বিলগুলোতে দেখা গেছে, ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় করে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ জন জেলে জাল পেতেছে। এ সময় জালে ধরা পড়ে দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় সব মাছ। এমনকি নদীতে থাকা জলজ প্রাণী এ জালে উঠে আসে। কিছু অসাধু জেলে ও স্থানীয়রা চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরা অবৈধ জানার পরও জীবন-জীবিকার তাগিদে এ কাজ করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

উপজেলার চর দাগারকুটি এলাকার জেলে আব্দুল মজিদ বলেন, চায়না জালে সব ধরনের মাছ ছেঁকে উঠে। দেশি প্রজাতির মাছের দাম বেশি ও চাহিদা ভাল থাকায় স্থানীয় মৌসুমি মৎস্য শিকারিরা এ জাল দিয়ে মাছ ধরে।

উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বারেক মিয়া জানান, আগে বাজারে বিপুল পরিমাণে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো দামও কম ছিল। এই কয়েক বছর ধরে তেমন একটা দেশীয় মাছ বাজারে পাওয়া যায় না। এখন চায়না জালের ব্যবহার বেশি হওয়া দেশি প্রজাতির মাছ অবাধে নিধন করছেন কিছু অসাধু জেলেসহ নদী পাড়ের মানুষজন। তাই এখন দেশি প্রজাতির মাছের সংখ্যা খুবই কম, দামও অনেক চড়া। এই নিষিদ্ধ চায়না জাল ব্যবহার বন্ধ করা না গেলে দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন তারা।   

উলিপুর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তারিফুর রহমান জানান, চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জেলে ও স্থানীয়রা যাতে এসব নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে দেশি প্রজাতির পোনা মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য মৎস্য বিভাগ বিভিন্ন এলাকায় মাছ শিকার বন্ধে প্রচার-প্রচারণা চলমান রয়েছে।  এরপরও যদি মাছ নিধন বন্ধ না হয়, তাহলে চায়না জাল ব্যবহার বন্ধের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে।


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close