রাত যত গভীর হয় ডাকাত আতঙ্ক বাড়ে রাজধানীসহ সারাদেশের মানুষের। উপায় না পেয়ে এলাকাভিত্তিক রাতভর লাঠি বাঁশি নিয়ে
পাহারাও দিচ্ছে ছাত্র-জনতা। রাজধানীসহ দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাতেও ডাকাতিকালে অস্ত্রসহ কয়েকজনকে স্থানীয়রা আটক করে সেনাবাহিনীর কাছেও হস্তান্তর করেন। ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে করা হয় মাইকিংও। থানাগুলোতে পুলিশ না থাকায় ডাকাতির খবর পেলে এলাকাবাসী ফোন করছে সেনাবাহিনী ও বিজিবিকে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে রাজধানীর বাসাবো, নন্দীপাড়া, রামপুরা গোড়ান, বনশ্রী,শাখারিবাজার, কাঠালবাগান ও মিরপুর এলাকায় ডাকাত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসব এলাকায় মসজিদে মাইকিং হয়েছে, সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।
রাজধানীর কলাবাগান, পান্থপথ, কাঠালবাগান, ভুতের গলি এলাকায় ডাকাতের আগমনে মসজিদের মাইক থেকে সাবধান করা হয়েছে। কাঠালবাগানে ডাকাতি করতে গিয়ে ১১ জন আটকের খবর পাওয়া গেছে। মিরপুরের মাজার রোড থেকে তিনজন ও শনির আখড়া থেকে একজন ডাকাতকে আটক করেছে স্থানীয়রা। ডাকাত আতঙ্ক নিয়ে বেশকিছু ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
কমলাপুর কবি জসীমউদ্দীন রোডে ডাকাত দল ঢোকার খবর পাওয়া গেছে। বাড্ডাতে মসজিদে মাইকিং করা হয়েছে, ডাকাতের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। রামপুরায় দুই ডাকাত ধরা পড়ার খবর পাওয়া গেছে। ডাকাত প্রতিরোধে নামে গ্রীন রোডবাসীও। অন্তত দুইশ’ মানুষ বাঁশি বাজিয়ে মিছিল করেছে। রাতভর আতঙ্ক দেখা যায় সেখানে। বাদ যায়নি পুরান ঢাকাও। শাঁখারীবাজার, তাতিঁবাজারে ডাকাতির খবর পাওয়া গেছে। সাতরওজা এলাকায় ডাকাত ধরতে এলাকাবাসী রাস্তায় নেমে যায়।
বৃহস্পতিবার রাতে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে ফেইজবুকে লিখেন, ‘রামপুরা এরিয়াতে ডাকাত বিভিন্ন দোকান পাটে হামলা করে লুট করতেছে, ওইদিকে যারা আছেন হেল্প করুন।’ একই রাতে ধানমন্ডি এলাকা থেকে ফেসবুকে ডাকাত বিষয়ক পোস্ট দেন রিদম নাথ নামক একজন। তিনি লেখেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাদের বাড়ির ঠিক পাশের বিল্ডিংয়ে এক দল লোক এসে জিনিসপত্র লুট করতে শুরু করে। কিন্তু তখন এলাকার মানুষজন পাহারা দেওয়ায় সবাই টের পেয়ে যায় এবং ওদেরকে ধাওয়া করে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাকাত দল এলাকায় প্রবেশ করে শুনে সবাই সতর্ক হন। বৃহস্পতিবার রাতেও মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডী, মিরপুর, রামপুরা এলাকায় ডাকাতির ঘটান ঘটে। এসময় মসজিদে মাইকিং ও সচেতন মুলক কথা বলা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী না থাকায় রাতে ডাকাতির ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এলকাবাসী। ডাকাতির ঘটনায় সেনাবাহিনী ও বিজিবির দেওয়া জরুরি নম্বরে ফোন করেন অনেকেই।
ডাকাত আতঙ্কে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১২ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নির্ঘুম রাত কাটিয়ে ফজরের আগে ঘুমিয়ে যান। সকাল ৭ টায় ঘুম ভাঙ্গলে দেখেন তার মাথার সামনে রাখা মোবাইলটি নেই। জানালার ফাঁক গলিয়ে মশারির ভেতর থেকে মোবাইলটি নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
এদিকে মন্দিরের সামনে রাতভর পাহারা দিতে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবীদের। পুরাণ ঢাকার শাখারিবাজার, ঢাকেশ্বরী মন্দির ও টঙ্গী বাজার মন্দিরে লাঠি ও বাঁশি নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে নিরাপত্তা দিয়েছেন ছাত্র জনতা।
সময়ের আলো/জেডআই